ধৃতেরা কোথায়, চিন্তায় পরিবার

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলনে হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গত শনিবার হরিশ্চন্দ্রপুরের ওই ছ’জনকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

বাপি মজুমদার

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাড়ির রোজগেরে ছেলেদের উত্তরপ্রদেশের লখনউতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কী মামলা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা পুলিশের হেফাজতে না জেল হেফাজতে, তা-ও জানা নেই। লখনউতে গিয়ে মামলা চালানোর মতো সামর্থ্যও নেই। ফলে ৯০০ কিলোমিটার দূরে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে কার্যত দিশেহারা অবস্থায় দিন কাটছে ধৃত ছয় শ্রমিকের পরিজনদের।

Advertisement

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আন্দোলনে হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গত শনিবার হরিশ্চন্দ্রপুরের ওই ছ’জনকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকে আর কোনও খবর মিলছে না বলেই তাঁদের পরিবারের দাবি। নিজেরাও খোঁজ নিতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে সামর্থ্যের চেয়েও বড় কথা ভয়। লখনউতেই থাকেন ধৃত খাইরুল ও সালেমুল হকের দাদা খালেদুল। কিন্তু খালেদুলও ভাইদের খোঁজ নিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। কেননা ধৃতরা জঙ্গি সংগঠন সিমির ঘনিষ্ঠ পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে জড়িত বলেই সংবাদমাধ্যমে তাঁরা জেনেছেন। তাতেই কেউ আর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। হরিশ্চন্দ্রপুরের আরও প্রায় শ’খানেক যুবক লখনউতে থাকেন, তাঁরাও একই ভয় পাচ্ছেন।

ধৃত ছ’জনের চার জন ডাঙ্গিলা ও দু’জন জনমদোল এলাকার বাসিন্দা। লখনউতে একটি হোটেলে শ্রমিকের কাজ করতেন তাঁরা। শনিবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। তার পর থেকেই ছেলেরা কী ভাবে ছাড়া পাবে, সেই ভাবনায় রাতের ঘুম উবে গিয়েছে পরিজনদের।

Advertisement

খাইরুলের বাবা মহম্মদ হোদা বলেন, ‘‘ওদের পাশে দাঁড়াব কী করে জানি না। ওরা কোথায় রয়েছে, তাই তো জানি না।’’ ধৃত সাঞ্জুর হকের বাবা আরিফুল হক বলেন,
‘‘স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকেও কিছু জানতে পারছি না।’’ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘‘নিয়ম মতো উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আমাদের বিস্তারিত জানাবে। তবে এখনও সরকারি ভাবে ওদের তরফে কিছু জানানো হয়নি।’’

তবে ধৃতদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে একটি সর্বভারতীয় মানবাধিকার সংগঠনের মালদহ শাখা। মালদহ শাখার সম্পাদক তথা আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিক বলেই জানতে পেরেছি। এ ক্ষেত্রে নাগরিক অধিকার ভঙ্গ হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ। রুজির খোঁজে যাওয়া ওই যুবকদের সন্ত্রাসবাদী বানানোর চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেটাও আমরা দেখছি। বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনকেও জানাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement