পাওলোর এক্সরে। বাঁ দিকে, উদ্ধার হওয়া ক্যাপস্যুল। নিজস্ব চিত্র।
ব্যাগে বা বাক্সে নয়, ৪৪টি মাদক-ক্যাপসুল পাকস্থলীতে ভরে ভারতে এসেছিলেন এক ব্রাজিলীয় যুবক। কলকাতা বিমানবন্দরে আচমকাই তাঁর পেটে ব্যথা শুরু হয়। অসুস্থ বিদেশিকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসার পর ওই যুবকের মল থেকে ৪৪টি মাদক-ক্যাপসুল উদ্ধার করেছেন চিকিৎসকরা। যার এক একটির ওজন ১২ থেকে ১৪ গ্রাম। ক্যাপসুলের ভিতর থেকে প্রায় আধ কেজি ওজনের কোকেন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত ১২ অগস্ট ব্রাজিল থেকে দুবাই হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন পাওলো সিজার পিনহেরিও বাস্তোস। ব্রাজিলের নাগরিক ৩১ বছরের এই যুবককে বিমানবন্দর থেকেই গ্রেফতার করে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো। তাদের সন্দেহ ছিল পাওলো পাচার করে আনা ক্যাপসুল গিলে ফেলেছেন। পরে পাওলো তাঁর পেটে ব্যথার কথা জানালে তাঁকে প্রথমে কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং পরে এসএসকেএমে নিয়ে আসা হয়, সেখানেই চিকিৎসার পর পাওলোর শরীর থেক ওই মাদক-ক্যাপসুল উদ্ধার করেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা।
মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালের এক্সরেতেই পাওলোর শরীরের ভিতর ওই ক্যাপসুলগুলি দেখা যায়। পরে তাঁর বিভিন্ন উইথড্রয়াল উপসর্গ, বিরক্তি-সহ একাধিক সমস্যা দেখা গেলে পাওলোকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে ওষুধ দিয়ে মলের মাধ্যমে বের করে আনা হয় ক্যাপসুলগুলিকে। যা পরে পরীক্ষা করে নারকোটিক গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ৪৪টি ক্যাপস্যুলের ভিতর ৪৯৭ গ্রাম কোকেন ছিল।
প্রাথমিক তদন্তের পর মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, পাওলো আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। একই সঙ্গে তাঁদের নিশ্চিত ধারণা, যে আধ কেজি কোকেন পাওলোর শরীর থেকে পাওয়া গিয়েছে, তা ভারতের কিছু বিশেষ ক্রেতাদের জন্যই ও ভাবে আনা হয়েছিল। কিন্তু গোটা বিষয়টি আরও বিশদে তদন্ত করে নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো দেখছে, কোথা থেকে, কী ভাবে, কাদের জন্য ওই ড্রাগ নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন পাচারকারী।
সূত্রের খবর ইতিমধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছুটি হয়েছে পাওলোর। শুক্রবার তাঁকে বারাসতের আদালতে পেশ করা হয়। বিবৃতিতে ঘটনাটি জানিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিশেষ ভাবে কৃতিত্ব দিয়েছে ওই বেসরকারি হাসপাতাল এবং এসএসকেএমের চিকিৎসকদের। তারা জানিয়েছে, চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য তারা কৃতজ্ঞ। তাদের সাহায্য ছাড়া এই মামলায় গোয়েন্দাদের পক্ষে বেশি দূর এগোনো সম্ভব হত না।