এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে ফের খুন। এ বার মুর্শিদাবাদের ডোমকল। শনিবার ভোরে ডোমকলের কুচিয়ামোড়া গ্রামে গুলি করে তিন জনকে খুন করা হয়। মৃতেরা সকলেই তৃণমূলকর্মী হিসাবে এলাকায় পরিচিত। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন এক জন। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম-কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এ কাজ করেছে। বিরোধীরা যদিও সে দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ কুচিয়ামোড়ার রাস্তায় এক দল দুষ্কৃতী ঘিরে ধরে গুলি করে খুন করে সোহেল রানা (১৯), খাইরুদ্দিন শেখ (৫৫) এবং রহিদুল হালসানা (২৮)-কে। ঘটনায় গুরুতর জখম হন রজব হালসানা। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই খুনের ঘটনার পিছনে রয়েছে অন্য একটি খুন। গত ১০ মার্চ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হয়। তার পর দিনই কুপিয়ে খুন করা হয় ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা আলতাফ শেখকে। এ দিন যাঁদের খুন করা হয়, তাঁদের মধ্যে আলতাফের ভাই ও বড় ছেলে রয়েছেন।
পুলিশ যদিও এ দিনের খুনের ঘটনাকে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বলেই দাবি করেছে। জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘তিন জন খুন হয়েছেন। কী কারণে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হয়েছে তিন জনকে। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে।’’ তবে, পুলিশেরই একটা অংশ অন্য গল্প শোনাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, এ দিন ভোরে আলতাফ-ঘনিষ্ঠদের একটা অংশ তাঁর খুনের বদলা নিতেই পথে নেমেছিল। পরিকল্পনা ছিল, জামিনে ছাড়া পাওয়া অভিযুক্তদের বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁদের উপর হামলা চালানো হবে। তবে এই পরিকল্পনার কথা আগে থেকেই জেনে যায় অপর পক্ষ। এই জেনে যাওয়ার কথা ঘুণাক্ষরে টের না পেয়েই এ দিন ভোরে বেরিয়ে পড়েন আলতাফ-ঘনিষ্ঠরা। পথেই ওই ভোরবেলায় তাঁদের ঘিরে ফেলা হয়। চলে গুলি। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিন জন।
আরও পড়ুন: আহত জুনিয়র চিকিৎসক পরিবহকে দেখতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও মত পাল্টালেন মমতা!
আরও পড়ুন: নবান্নে যাব না, মুখ্যমন্ত্রী এখানে আসুন, বৈঠক শেষে জানিয়ে দিলেন অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা
এই খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় আমাদের কর্মাধ্যক্ষ খুন হন। গ্রেফতার করা হয় কয়েক জনকে। ক’দিন হল ওরা ছাড়া পেয়েছে। ফিরে এসেই নানাবিধ ভাবে হুমকি দিচ্ছিল। এ বার সিপিএম-কংগ্রেস আশ্রিত ওই দুষ্কৃতীরাই ফের খুন করল।’’ যদিও আবু তাহেরের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত নাথ বলেন, ‘‘তৃণমূল ঘুমন্ত অবস্থাতেও কংগ্রেসের ভূত দেখে। সামনে কোনও ভোট নেই। আমাদের হাতে পুরসভা-পঞ্চায়েত, কিছুই নেই। তা হলে আমরা এ কাজ কেন করব? ডোমকলে একের পর এক খুনের ঘটনায় তৃণমূলের পুরনো ও নতুন গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বই দায়ী।’’ এ বিষয়ে সিপিএম নেতৃত্বের তরফে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।