সদ্যোজাত বাঘ শাবক। নিজস্ব চিত্র
ফের বাঘ শাবক জন্মালো বেঙ্গল সাফারি পার্কে। বুধবার ভোর পৌনে ৫টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে পার্কের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শীলা স্বাভাবিক জঙ্গলের ঘেরাটোপের মধ্যে তিনটি বাঘ শাবকের জন্ম দিয়েছে। দুই বছর আগে শীলা-ই তিনটি শাবকের জন্ম দিয়েছিল।
বন দফতর সূত্রের খবর, মা ও সন্তানরা সুস্থ রয়েছে। আগামী কিছুদিন শীলা এবং তার সন্তানদের উপর সিসিটিভি-র মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলবে। আগের বারের তিনটির মধ্যে একটি শাবক মারা গিয়েছিল। বাকি দু’টি শাবক এখন বড় হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পার্কে সাতটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
বন দফতরের তরফে বিষয়টি জানানোর পরে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেলিফোন করে বিস্তারিত জানান। গৌতম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানোর পর উনি খুব আনন্দিত হয়েছেন।’’ বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ভিডিয়ো বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, এই তিন শাবক ভবিষ্যতে বেঙ্গল সাফারির আকর্ষণ আরও বাড়াবে।
বন দফতর সূত্রের খবর, শীলা এবং স্নেহাশিস নামে রয়্যাল বেঙ্গল বাঘদু’টিকে নন্দনকানন থেকে শিলিগুড়ি আনা হয়েছিল। ২০১৮এর ১১মে রাতে শীলা প্রথমবার তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। মুখ্যমন্ত্রী সেগুলির নামকরণ করেন, ইকা, কিকা এবং রিকা। পরে অস্থি এবং জটিল কিছু সমস্যায় ইকা মারা যায়। বাকি দু’টি এখন বড় হয়েছে, সাফারি পার্কেই রয়েছে। এরমধ্যে স্নেহাশিসকে কলকাতায় পাঠিয়ে জামশেদপুর হয়ে বিভান নামে আর একটি পুরুষ রয়্যাল বেঙ্গলকে শিলিগুড়ি আনা হয়। বুধবার ভোরে শীলার জন্ম দেওয়া তিনটি শাবকের বাবা বিভানই। আপাতত শীলাকে বাকিদের থেকে আলাদা করে শাবকদের সঙ্গে থাকতে দেওয়া হয়েছে। বাকি ২০ হেক্টরের বিভিন্ন প্রান্তে রিকা, কিকা এবং বিভান আলাদা ভাবে রয়েছে।
গতবার সন্তান প্রসবের পর টানা তিনদিন শীলা মুখে জল পর্যন্ত তোলেনি। এ বারও তাই করছে। তার পরে ধীরে ধীরে জল, মুরগির মাংসের কিমা, স্যুপ খেয়ে চাঙা হয়েছিল শীলা। শাবকগুলির চোখ ফুটতে কম করে ১০-১২ দিন সময় লাগে। এর পরে মাস তিনেক মা-র দুধ খাওয়ার পর মাংস চেটে স্বাদ নেওয়া শুরু করে শাবকেরা। বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা ধর্মদেব রাই জানান, শাবকগুলি সুস্থ রয়েছে। সেগুলির লিঙ্গ নির্ধারণ করতে বেশ কিছু সময় লাগবে। মা ও শাবকদের কাছে আপাতত কেউ যাবে না।
বনকর্তারা জানাচ্ছেন, রয়্যাল বেঙ্গলের শাবকদের মৃত্যুর হার ৩৩ শতাংশ মত। শাবকদের বাঁচিয়ে রাখার উপায় হল প্রথম দুই-তিনমাসে একেবারে কাছে না যাওয়া এবং শরীরে হাত না দেওয়া।