শামিম হোসেন এবং বরুণ মূর্মু। নিজস্ব চিত্র
বীরভূমের ইলামবাজারের এক ব্যবসায়ী এবং তাঁর গাড়িচালককে খুনের অভিযোগে ডানকুনি থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ৫ অগস্ট থেকেই নিখোঁজ ছিলেন ব্যবসায়ী শামিম হোসেন এবং তাঁর গাড়িচালক বরুণ মুর্মু। পরিবারের সঙ্গে শামিমের শেষ কথা হয় ওই দিনই। তার পর থেকে ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না বলে তাঁর পরিবার সূত্রে দাবি করা হয়েছে। একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, শামিমের ফাস্টফুডের ব্যবসা রয়েছে। সেই সুবাদে কলকাতাতে মাঝেমধ্যেই আসতে হত তাঁকে। শামিমের একটি পিকআপ ভ্যান রয়েছে। সেই গাড়িতে করেই চালক বরুণকে নিয়ে ৫ অগস্ট কলকাতায় জিনিসপত্র আনতে গিয়েছিলেন। কলকাতার কোথায় কোন জিনিস পাওয়া যায় তার জন্য গাইড ভাড়া করেছিলেন ডানকুনি থেকে। দীর্ঘ দিন ধরেই আখতার নামে এক গাইড শামিমের কাজ করতেন। গড়িয়ার একটি জায়গা থেকে শামিম তাঁর প্রয়োজনীয় মালপত্র নিতেন। ৫ অগস্ট আখতারকে নিয়ে গড়িয়াতে গিয়েছিলেন শামিম। কিন্তু মাল না থাকায় ফিরে আসতে হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এর পর শামিম এবং বরুণ রাতে ডানকুনিতে যান আখতারের সঙ্গে। সেখানে খাওয়াদাওয়া করেন আব্দুল করিম ওরফে কালোর বাড়িতে। সেখানে বাবু নামে আখতারের আরও এক সঙ্গী হাজির ছিল। আখতার জানতেন, শামিমের কাছে নগদ ৭০ হাজার টাকা আছে। খাওয়াদাওয়া শেষে পরিকল্পনা করে শামিম এবং বরুণকে ওই তিন জন খুন করেন বলে অভিযোগ। এমনকি কেউ যাতে টের না পায়, দু’জনের দেহ ডানকুনির একটা পচা খালে ফেলে দেয়। পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য শামিমের পিকআপ ভ্যানটিকে জামালপুরে ফেলে আসেন আখতাররা।
খালি গাড়িটি পরে থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। গাড়ির মালিকের খোঁজ করতে গিয়ে জামালপুর থানার পুলিশ জানতে পারে সেটি শামিম নামে এক ব্যবসায়ীর। তিনি বেশ কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ। শামিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে জানতে পারে গড়িয়ার ঠিকানা যেখানে শামিম মাল আনতে যেতেন। এর পর পুলিশ গড়িয়ার সেই ঠিকানায় যায়। সেখান থেকে আখতারের কথা জানতে পারে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজেও আখতারকে শামিমদের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল।
আখতারের খোঁজ করতে জামালপুর থানার পুলিশ ডানকুনি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তল্লাশি চালিয়ে আখতারকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে খুনের বিষয়টি জানতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। একই সঙ্গে কালো এবং বাবুরও হদিশ পান তদন্তকারীরা। তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়।