বিক্ষোভ: দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে এককাট্টা গ্রামে মেয়ে-বৌরা
দিনের পর দিন দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে তিতিবিরক্ত মানুষজন। পুলিশও সময় মতো ব্যবস্থা নেয় না বলে অভিযোগ। শেষমেশ পথে নামলেন মহিলারাই। মারমুখী মহিলাদের সামনে পিছু হটতে বাধ্য হয় আট-দশজনের দুষ্কৃতী দল। তাদের ঘিরে ধরে গ্রামের মেয়ে-বৌরা দু’টি একনলা বন্দুক কেড়ে নেন। পরে সে দু’টি উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু তাতেও শান্ত হননি মহিলারা। এ বার দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা।
বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাড়োয়ার গোপালপুরের মুন্সিঘেরি এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকায় মুদি দোকানি ভবসিন্ধু দাসের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জগবন্ধু দাস ওরফে কেলোর বেশ কিছু দিন ধরেই গন্ডগোল। ভবসিন্ধু বিজেপি করেন। জগবন্ধু তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। ফলে দু’পক্ষের গোলমালে রাজনীতির রং লেগেছে বহু আগেই।
গোলমাল মঙ্গলবার বড় আকার নেয়। সন্ধ্যায় ভবসিন্ধু এবং জগবন্ধুর মধ্যে প্রথমে বচসা পরে হাতাহাতি লাগে। ভবসিন্ধুর লোকজনেরা তৃণমূল কর্মী জগবন্ধুকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ভবসিন্ধু বলেন, ‘‘এই ঘটনার পর রাতে একদল লোক গ্রামে ঢুকে বাড়ি ঘর ভাঙচুর এবং মারধর করে। দোকান এবং পোলট্রিতে গুলি-বোমা ছুড়ে লুঠপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।’’ জগবন্ধু বলেন, ‘‘অন্যায় ভাবে আমাকে মারধর করা হয়েছে। নিজেরাই আগুন লাগিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’’
বুধবার সকালে ফের দু’পক্ষের মধ্যে আর এক দফা গন্ডগোল বাধে। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ওই সময়ে জগবন্ধু দাস এবং পরিতোষ সর্দারের লোকজনেরা বন্দুক হাতে আক্রমণ করলে মহিলারা একজোট হয়ে তার প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ায়। দুষ্কৃতীদের হাতে থাকা দু’টো বন্দুক কেড়ে নেন মহিলারা। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে মহিলারা ওই বন্দুক নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে পুলিশ মহিলাদের কাছ থেকে বন্দুক দু’টি উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে বিজেপির বসিরহাট জেলার সভাপতি তারক ঘোষ বলেন, ‘‘এখানে জঙ্গলরাজ চলছে। প্রতিদিনই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের দলের কর্মীদের মারধর করছে।’’ তৃণমূল নেতা সঞ্জু বিশ্বাস বলেন, ‘‘সামান্য জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাদের দলের একজনকে মারধর করে।’’ উভয়ের পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।