কর্দমাক্ত: আমলানি পঞ্চায়েত এলাকার বেহাল রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
আমলানি পঞ্চায়েত জুড়ে ছ’টি প্রধান রাস্তাই বেহাল। অলিগলি ও অন্য রাস্তা মিলিয়ে প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন। অথচ, পথশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে এই পঞ্চায়েতের মাত্র ৩২০ মিটার রাস্তা ঢালাইয়ের অনুমোদন মিলেছে। বাকি রাস্তার মেরামতি নিয়ে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েতের তকিপুর দিঘির পার থেকে রাঘবপুর খইতলা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার পিচের রাস্তা ২০০৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এখন তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। পিচ উঠে গর্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি হলে জল জমে থাকে রাস্তায়। এই রাস্তার আশেপাশে সাড়ে তিন হাজার মানুষের বাস রয়েছে। রাস্তার পাশে রাঘবপুর প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। এই রাস্তাটি মিশেছে টাকি-মালঞ্চ রোডে। বহু মানুষ যাতায়াত করেন রাস্তাটি দিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল গাজি, সেলিম গাজি জানান, ২০১৫ সালের পর থেকেই রাস্তা খারাপ। একবারও সংস্কার হয়নি। পথশ্রী প্রকল্পেও এই রাস্তা হল না।
আমলানি হাটখোলা থেকে ৫১ নম্বর রেলগেট হয়ে উত্তর হরিপুর শেখপাড়া পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার ইটের রাস্তাও খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০০৪ সালে এই রাস্তাটি ইট দিয়ে বাঁধানো হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক বছরেই তা খারাপ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে যেমন তেমন করে সংস্কার করা হলেও ফের বেহাল রাস্তা। এই রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলেই দু’টি প্রাথমিক স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছনো যায়। বেহাল রাস্তাটি দিয়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছতে সমস্যা হয় প্রসূতিদের।
নন্দনপুর থেকে সুন্দরিয়া সুন্নি মসজিদ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার ইটের রাস্তাও গর্তে ভরে গিয়েছে। ২০০৪ সাল নাগাদ এই রাস্তা তৈরি হয়েছে, তারপর থেকে আর কোনও সংস্কার হয়নি। বর্ষা হলেই জল জমে থাকা একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমলানি পঞ্চায়েতের সামনের রাস্তা, আমদানি হাটখোলা হয়ে হাসনাবাদের সহ কৃষি অধিকর্তা অফিস পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ১২০০ মিটার পিচের রাস্তা এখন কঙ্কালসার দশা। ২০১৯ সালে একবার সংস্কার করা হলেও বছর ঘুরতেই ফের পুরনো চেহারায় ফিরে আসে। এই রাস্তা দিয়ে মুরারিশা, ভেবিয়া, মাখালগাছা পঞ্চায়েতের মানুষ দ্রুত হাসনাবাদ বিডিও অফিস, হাসনাবাদ থানা, ব্যাঙ্কে পৌঁছতে পারেন। কিন্তু এই রাস্তা খারাপ থাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে মানুষকে। তকিপুর অটো স্ট্যান্ড থেকে নন্দনপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার ঢালাই রাস্তারও জরাজীর্ণ অবস্থা। বসিরহাট হাসপাতালে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে রাস্তাটি ব্যবহার করেন অনেকে।
এই রাস্তাগুলি ছাড়াও পঞ্চায়েত জুড়ে প্রায় ১০-১২টি অলিগলির রাস্তার অবস্থাও বেশ খারাপ। আমলানি পঞ্চায়েতের প্রধান রোকেয়া মণ্ডল বলেন, “পঞ্চায়েতের মানুষ রাস্তার সমস্যায় জর্জরিত। পথশ্রীতে আমাদের পঞ্চায়েতে শুধু আশাড়িয়া পূর্বপাড়ায় একটি ৩২০ মিটার রাস্তা ঢালাই হচ্ছে। বাকি রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
হাসনাবাদের বিডিও অলিম্পিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের বাকি রাস্তা বিভিন্ন ভাবে যাতে সংস্কার করা যায় তা দেখা হবে। ব্লক জুড়ে ১২টি রাস্তা পথশ্রীতে ধরা হয়েছে।”