প্রতীকী ছবি
দাদা করোনা পজিটিভ। অভিযোগ, সংক্রমণের আশঙ্কায় ভাইকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল কিছু গ্রামবাসী। অশোকনগর-কল্যাণগড়ের ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ অবশ্য ওই যুবককে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে এসেছে।
পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘অমানবিক আচরণ। যুবক করোনা পজিটিভ হওয়ার পরে এলাকায় গিয়ে আমি মানুষকে বুঝিয়ে এসেছিলাম। আমরা পুরসভার পক্ষ থেকে সমস্ত রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করছি। আমি এলাকা থেকে ফিরে আসার পরে কিছু মানুষ আক্রান্ত যুবকের ভাইয়ের সঙ্গে ওই আচরণ করেছেন বলে খবর পেয়েছি।’’ মানুষকে আরও সহনশীল হতে হবে বলে তিনি জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকার বাসিন্দা দুই ভায়ের বাবা মা অনেক বছর আগে মারা গিয়েছেন। তাঁরা মামাদের কাছে মানুষ হয়েছেন। কাজের জন্য মুম্বইয়ে পাড়ি দেন। কয়েক বছর ধরে সেখানে হোটেলে কাজ করছেন। লকডাউনের জেরে দু’মাস কাজকর্ম নেই। সম্প্রতি দুই ভাই বাড়ি ফেরেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, তাঁদের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। বৃহস্পতিবার দাদার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসে পুরসভার কাছে। তাতে দেখা যায় তিনি পজিটিভ। ভাইয়ের রিপোর্ট এখনও আসেনি। আক্রান্ত যুবককে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাইকে নিভৃতবাসে রাখা হয়। অভিযোগ, এরপরেই এলাকার কিছু মানুষ দাবি তোলে, ভাইকে বাড়িতে থাকতে দেওয়া হবে না। তারা বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে ভাইকে বাড়ি থেকে বাইরে বের করে দেয়। গভীর রাতে ওই যুবক প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে এসে আশ্রয় নেন। যাতে কেউ তাঁর সংস্পর্শে আসতে না পারেন, তাই যুবক নিজেকে সকলের থেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। শুক্রবার সারা দিন অভুক্ত অবস্থায় হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কাটান তিনি। সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের নজরে আসে বিষয়টি। খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অশোকনগর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশ ওই যুবককে হাসপাতাল চত্বর থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পুলিশের তরফে বাসিন্দাদের বোঝানো হয়েছে। শনিবার হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ওই যুবকের ফের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি এখন নিভৃতবাসে থাকবেন। প্রবোধ বলেন, ‘‘ওই যুবকের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা আমরা দেখব।’’