পুকুর থেকে উদ্ধারের পর ব্যালট বাক্স হাতে তৃণমূল নেতা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট শেষের পর ব্যালট বাক্স নিয়ে স্ট্রং রুমে যাচ্ছিলেন ভোটকর্মীরা। আচমকা তা ছিনিয়ে নিয়ে সোজা পুকুরে ছুড়ে ফেলেন কয়েক জন। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর জ্যোতিষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধারানিপুর স্কুলের ২৪১ নম্বর বুথে। রবিবার দুপুরে পুকুর সাঁতরে তৃণমূল কর্মী এবং গ্রামবাসীরা মিলে সেই বাক্স উদ্ধার করেছেন। উদ্ধার হওয়া ফাঁকা ব্যালট বাক্স হাতে নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, হার অবশ্যম্ভাবী বুঝতে পেরে বিরোধীরা একত্রে এই কাজ করেছে। মানুষের রায়কে তারা এ ভাবে জলে ভাসিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন তাঁরা। অন্য দিকে, তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে যথেচ্ছ ছাপ্পা মারার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই উত্তপ্ত ছিল বাসন্তী। শনিবার ভোটের সারা দিনই অশান্তি হয়েছে সেখানে। রাধারানিপুরের ২৪১ নম্বর বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ তোলে আরএসপি। তাদের দাবি, ঠিক ভাবে ভোট হলে সংশ্লিষ্ট আসনে তাদের জয় ছিল অবধারিত। যদিও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তারা। আরএসপি নেতৃত্বের দাবি, ভোটে অনিয়ম দেখে সাধারণ ভোটাররাই এই কাজ করেছে।
রবিবার এলাকার একটি বড় পুকুরে নেমে ব্যালট বাক্স তুলে আনেন কয়েক জন। তার পর আরএসপি, বিজেপি, সিপিএম এবং আইএসএফকে একত্রে আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী সুকান্ত মজুমদারের চ্যালারা, সিপিএম এবং আইএসএফের হার্মাদরা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার লুট করেছে। রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলকে হারাতে না পেরে আমাদের কর্মীদের মারধর করে শেষ পর্যন্ত ব্যালট বাক্স চুরি করে। আসলে তৃণমূলকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে ওরা। আমাদের ১৫ জন আহত হয়েছেন। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।’’ তৃণমূলের নেতার সংযোজন, ‘‘বিজেপি, সিপিএম এবং আইএসএফ ব্যালট বাক্স লুট করেছিল। রবিবার তৃণমূল কর্মী এবং গ্রামবাসীরা পুকুর থেকে বাক্স উদ্ধার করলেন।’’ অন্য দিকে, বিরোধীরা একত্রে এই অভিযোগ নস্যাৎ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘ভোটচুরি’র অভিযোগ করেছে।