শওকতের কথায়, ‘‘ঘরের জন্য দাও ৫ হাজার- ১০ হাজার টাকা। বিচারের জন্য দাও ৫ হাজার-১০ হাজার টাকা। রাস্তার জন্য দাও ৫ হাজার ১০ হাজার টাকা!’’ —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙড়ে সব গন্ডগোলের নেপথ্যে আইএসএফের হাত দেখতে পাচ্ছেন না তৃণমূল পর্যবেক্ষক তথা বিধায়ক শওকত মোল্লা। উল্টে কয়েক জন নেতাকেই দোষারোপ করলেন তিনি। প্রকাশ্যেই তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ করলেন তিনি। শুক্রবার ভাঙড়ের সভা থেকে শওকতের এই ‘আত্মসমালোচনায়’ সমর্থন জানালেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতৃত্বের বড় অংশ।
শুক্রবার ভাঙড়ের ফুলবাড়ি এলাকায় একটি সভা করেন শওকত। সেখানে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষকের মন্তব্য, ‘‘আইএসএফকে দোষ দেব না। আমাদের নেতাদেরও দোষ আছে।’’ সুর চড়িয়ে শওকতের সংযোজন, ‘‘আমাদের কিছু ভিখারি নেতা আছে। এদের কাজ কি? হাত পেতে টাকা নেওয়া। ঘরের জন্য দাও ৫ হাজার- ১০ হাজার টাকা। বিচারের জন্য দাও ৫ হাজার-১০ হাজার টাকা। রাস্তার জন্য দাও ৫ হাজার ১০ হাজার টাকা।’’
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতিতে রাজ্যের শাসকদলকে ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মে শোরগোল চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। শেখানো খোদ তৃণমূল বিধায়কের এমন ‘স্বীকারোক্তি’কে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষত পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শুদ্ধিকরণের দিকে নজর দিচ্ছেন, তার ছাপ দেখা গেল শওকতের বক্তব্যেও। ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক শওকত এ-ও বলেন, ‘‘আমি আমার বিধানসভায় (নিয়ম) চালু করেছি, কোনও নেতা গরিব মানুষের কাছ থেকে ৫ টাকা নিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে দল থেকে বার করে দেওয়া হবে।’’
শওকতের এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘এটা আমাদের দাবি। আমরা যাঁরা স্বচ্ছ রাজনীতি করি, এটা তাঁদের সকলের দাবি।’’
তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকির কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত— আপাদমস্তক সব নেতাই দুর্নীতিতে যুক্ত। ভোটের আগে এই সব বলে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেতারা।’’