—প্রতীকী ছবি।
রাতের অন্ধকারে গুলি করে এবং কুপিয়ে খুন করা হল গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্জুনপুর এলাকায় শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। নিহতের নাম মৈমুর ঘরামি। তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। মৈমুরের পাশাপাশি এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন তাঁরই প্রতিবেশী শাজাহান মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় সিপিএমের এক নেতা নজরুল ফকিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মৈমুরের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন নজরুল। খুনের ঘটনার পর থেকে থমথমে মগরাহাট পূর্বের অর্জুনপুর এলাকা। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই খুন করেছে। যদিও সিপিএমের তরফে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সিপিএমের মগরাহাট বিধানসভার আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক চন্দন কুমার দাস জানান, এই খুনের পিছনে সিপিএমের কোনও হাত নেই। দলের এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেও চন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা কমিটি সম্পাদক শমীক লাহিড়ী বলেন, ‘‘পুলিশ এই খুনের ঘটনায় তৃণমূলের অন্তর্কলহ ধামাচাপা দিতে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।’’ নজরুলকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন মৈমুর। বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী তাঁকে ঘিরে ধরেন। অভিযোগ, মৈমুরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালান দুষ্কৃতীরা। এর পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানোও হয়। মৈমুরের চিৎকার শুনে তাঁকে বাঁচাতে আসেন মৈমুরের প্রতিবেশী শাজাহান। অভিযোগ, তাঁকেও গুলি করেন দুষ্কৃতীরা। এর পরই ওই দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে তাঁদের দু’জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৈমুরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ শাজাহানের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। ঘটনার পর রাতেই বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মিতুন বলেন, ‘‘মগরাহাট পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্জুনপুরে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী ছিলেন মৈমুর। তাঁকেই খুন করা হয়েছে। পাশাপাশি এক জন আহতও হয়েছেন। বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীর নাম উঠে আসছে। যার মধ্যে ইতিমধ্যেই এক জনকে আটক করা হয়েছে। ওই দুষ্কৃতীরা এলাকায় চুরিচামারির সঙ্গে যুক্ত। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সেই দুষ্কৃতীদের বাধা দেওয়ার কারণেই শুক্রবার মৈমুরের উপর হামলা চালানো হয়। একটি জমিজায়গা সংক্রান্ত বিবাদের বিষয়ও উঠে এসেছে।’’ তবে এই খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও জানিয়েছেন।