Lok Sabha Election 2024

ভোটের আগে ‘বালুহীন’ হাবড়ায় ঘর গোছাতে পদক্ষেপ তৃণমূলের

জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন হাবড়ায় দলীয় সংগঠনের ‘শেষ কথা।’ তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বালুর গ্রেফতার হওয়াটা হাবড়ার নেতা-কর্মীদের কাছে বড় ধাক্কা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৫৭
Share:

গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডি গ্রেফতার করেছে হাবড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। তিনি কবে জেল থেকে ছাড়া পাবেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। লোকসভা ভোটের আগে জ্যোতিপ্রিয় ছাড়া পাচ্ছেন না, তা ধরে নিয়েই এ বার তৃণমূল নেতৃত্ব হাবড়ায় দলের সংগঠন আরও শক্তিশালী করতে আসরে নেমে পড়লেন।

Advertisement

দিন কয়েক আগে চাকলায় দলের কর্মিসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘‘বালুকে (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাকনাম) গ্রেফতার করা হয়েছে, যাতে সে দলের কাজ করতে না পারে। নির্বাচন করতে না পারে।’’ বালুর অনুপস্থিতিতে দলের সংগঠনের হাবড়ার দিকের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী দিয়ে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীকে। সোমবার জেলা পরিষদ ভবনে হাবড়ার তৃণমূল নেতাদের নিয়ে নারায়ণ বৈঠক ডাকেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণ সাহা, হাবড়া শহর তৃণমূল সভাপতি সীতাংশু দাস, হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেহাল আলি, তৃণমূলের হাবড়া ১ ব্লক সভাপতি জ্যোতি চক্রবর্তী, হাবড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ অজিত সাহা।

বৈঠক শেষে জেলা সভাধিপতি বলেন, ‘‘এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ৬ জন সদস্য এবং হাবড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান তপতী দত্তকে নিয়ে ৭ জনের একটি কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হাবড়া বিধানসভা এলাকায় দলীয় সংগঠনের কাজ করবেন।’’

Advertisement

জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন হাবড়ায় দলীয় সংগঠনের ‘শেষ কথা।’ তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বালুর গ্রেফতার হওয়াটা হাবড়ার নেতা-কর্মীদের কাছে বড় ধাক্কা। কর্মীরা আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছেন। বালুর অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ দিন দিন নিষ্ক্রিয় থাকা কিছু নেতা-কর্মী আবার
সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এই পরিস্থিতিতে গোষ্ঠীকোন্দল মাথা চাড়া দেওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। বালুপন্থী নেতারা নিজের
মতো করে জগদ্ধাত্রী পুজো, পৌর ক্রীড়া, বাণীপুর লোক উৎসব করেছেন। সেখানে বালুকে মুখ্য বা প্রধান পৃষ্ঠপোষক করে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। ঘটা করে বালুর জন্মদিনও পালন করা হয়েছে।

এ দিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নেতা-কর্মীদের মনোবল ফেরাতে
এবং সংগঠনের ঐক্যের ছবি দেখাতে ২০ জানুয়ারি হাবড়ায় মহামিছিল
হবে। জেলা সভাধিপতি বলেন, ‘‘হাবড়া বিধানসভা এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ মিছিলে হাঁটবেন।
জেলা কোর কমিটির সদস্যেরা থাকবেন। ১৫ জানুয়ারি প্রস্তুতি সভা হবে।’’ এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বালুদার অনুপস্থিততে লোকসভায় ভাল ফল করাটা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ।’’

তৃণমূলের এই পদক্ষেপকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। হাবড়ার সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল একটি দিশাহীন-আদর্শহীন দল। তবে তারা কোনও ভাবেই আর মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। লোকসভা ভোটের আগে হাবড়ায় তৃণমূল যা-ই করুক, তাতে কোনও ফল হবে না।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘‘২০ হাজার মানুষ এখন তৃণমূলের পক্ষে খুঁজে পাওয়াই মুশকিল! কোনও সুস্থ-স্বাভাবিক, ভদ্রলোক তৃণমূলের সঙ্গে নেই। মিছিলে থাকবে চোর-ডাকাত, দুষ্কৃতী এবং রোহিঙ্গারা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement