নামখানায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবনের বেহাল নদীবাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোলাবাজি ও অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের পাল্টা দাবি, রাজ্যে নদীবাঁধ ভাঙন মেরামতির জন্য কেন্দ্র কোনও অর্থ বরাদ্দ করছে না।
রবিবার দুপুরে নামখানা ব্লকের ফ্রেজারগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার হাতিকর্নার, কয়লাঘাটা ও কালীস্থান এলাকা এলাকা ঘুরে দেখেন সুকান্ত। ওই এলাকার নানা জায়গায় নদীবাঁধ বেহাল বলে অভিযোগ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির দখলে থাকা ফ্রেজারগঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও অন্য নেতারা। স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা অভিযোগ করেন, বেহাল নদীবাঁধ দীর্ঘ দিন সংস্কার হচ্ছে না। সুকান্ত শতাধিক বাসিন্দাকে ত্রিপল দিয়ে সাহায্য করেন। আশ্বাস দেন, বিষয়টি কেন্দ্রে জানাবেন, যাতে দ্রুত সমাধান হয়।
তৃণমূল নেতাদের পাল্টা দাবি, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ না দেওয়াতেই বাঁধ সংস্কার করা যাচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। সুকান্তের পাল্টা অভিযোগ,তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির জন্যই কেন্দ্রের টাকা বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নদীবাঁধ তৈরির জন্য টাকা খরচ হলে কেন্দ্র দেবে, কিন্তু সেই টাকা যদি তৃণমূল নেতাদের পকেটে চলে যায় তা হলে পরে আর টাকা পাবে না।’’
বাঁধের কাজ তোলাবাজির দাপটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও বাঁধে কাজ করতে হলে ধাপে ধাপে তৃণমূলের ছোট থেকে বড় নেতাদের তোলা দিতে হচ্ছে। বাকি টাকায় ঠিকাদার কী করে কাজ করবেন? তাই আর কাজ হয় না বেশিরভাগ জায়গায়।’’ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে সুকান্তের দাবি, ‘‘জলশক্তি বলে কেন্দ্রে নতুন একটি মন্ত্রালয় করা হয়েছে। সেখানে কোনও যোগাযোগ করে না এরা! লোকসভায় বাঁধ নিয়ে এমন ভাবে বলে যেন, আমরা বাঁধগুলো দখল করে নেব। টাকা কেন্দ্র দেবে, আপনারা দেখভাল করুন। এ রাজ্যে টাকা পাঠালে সেই টাকা কোথায় হাওয়া হয়ে যায়, কেউ জানে না।’’
ভাঙন রুখতে বিজেপিই উদ্যোগী হবে বলে দাবি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বলেন, ‘‘ভাঙন, নদীবাঁধ নিয়ে আমরা একটি প্রস্তাব তৈরি করব। জলশক্তি মন্ত্রীকে দেব। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করব।’’
রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বাঁধ পরিদর্শন করে যদি বিজেপির রাজ্য সভাপতির যেন এই ভাবনা উদয় হয়, যে বাঁধগুলি বাঁচানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে সুখী আর কেউ হবেন না!’’
এ দিন সুকান্ত কাকদ্বীপের অক্ষয়নগর এলাকায় দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেন। কাকদ্বীপ এলাকায় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। মুড়িগঙ্গা নদীতে মানুষের ভোগান্তি ও সেতু তৈরি নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে সুকান্ত বলেন, ‘‘সবই যদি কেন্দ্র সরকারের কাছে এ রাজ্যের মন্ত্রীরা আবেদন করবেন, এদের মন্ত্রী থেকে লাভকী? সব কিছুর পিছনে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না।’’