সাগরে সতর্কবার্তা প্রশাসনিক আধিকারিকদের। — নিজস্ব চিত্র।
কালীপুজোর পর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বাংলাদেশে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রং। এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তা নিয়ে আতঙ্কের প্রহর গুনছে এ পার বাংলাও। তার মোকাবিলায় কোমর বাঁধছে উপকূলবর্তী জেলার প্রশাসনও। ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে অমাবস্যার কটালও। ফলে সমুদ্র এবং সুন্দরবনের নদীগুলিতে জলস্ফীতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে শনিবার থেকে সুন্দরবনের নামখানা, কাকদ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা, কুলতলি, ক্যানিং এবং গোসাবায় প্রশাসনের তরফে প্রচার করা হয়েছে সতর্কবার্তা।
নিম্নচাপ এবং কটালের জোড়া ফলায় আশঙ্কার মেঘ দেখছেন উপকূলের বাসিন্দারা। মৎস্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল আগেই। শনিবার দুপুর থেকে কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ এবং ডায়মন্ড হারবারের বন্দরে ফিরতে শুরু করেছে মাছধরা ট্রলারগুলি। সুন্দরবনের গ্রামগুলিতে পুলিশ এবং ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের স্থানীয় সাইক্লোন সেন্টার এবং ফ্লাড সেন্টারে আশ্রায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রবিবার থেকে সমুদ্রে নামা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে সুন্দরবন এবং উপকূলের সব ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক এবং ব্লক প্রশাসনের তরফে জরুরি ভিত্তিতে খোলা হয়েছে একটি করে কন্ট্রোল রুমও।
প্রতিটি ব্লক অফিস এবং পঞ্চায়েত অফিসে মজুত রাখা হয়েছে ত্রিপল, শুকনো খাবার। মোতায়েন করা হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘দুর্যোগ মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে। জরুরি প্রত্যেকটি বিভাগকে নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে রোজ। পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি থাকবে।’’
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা শনিবার সুন্দরবনের উপকূল এলাকার বেহাল বাঁধ পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি প্রশাসন এবং সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি ব্যবস্থাপনাও খতিয়ে দেখেন তিনি। মন্ত্রী পরে বলেন, ‘‘প্রশাসন তৎপর রয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারগুলি চালু করে দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হচ্ছে।’’ জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।