বিক্ষোভ: সামিল মহিলারাও। গোসাবায়। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
ত্রাণ না পেয়ে এ বার পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকার বেশ কিছু মানুষ। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বিজেপি কর্মীরাও।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতে। এ দিন পঞ্চায়েত প্রধান ভারতী গায়েন ও উপপ্রধান দেবপ্রসাদ সরকারকে ঘিরে বিক্ষোভ চলে। পঞ্চায়েতের বাইরে বিজেপি দলীয় পতাকা নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। গোসাবা থানার পুলিশ আসে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবের পর থেকে এখনও পর্যন্ত গোসাবার বহু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, রাতের অন্ধকারে বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলি বঞ্চিত হচ্ছে।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে গত বার বিজেপি ও তৃণমূল ছ’টি করে আসন পায়। প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূলের ভারতী গায়েন। অভিযোগ বোর্ড গঠনের পর থেকেই এই পঞ্চায়েতে বিজেপি সদস্যদের সে ভাবে সরকারি কাজে ডাকা হয় না। এলাকায় কোনও সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁদের বঞ্চিত করা হয়।
বুলবুলের পরে ত্রাণ বিলি নিয়েও গ্রামে গ্রামে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবারেরও একই অভিযোগ। পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য সুলতা মণ্ডল, যমুনা বৈদ্য, সাগরিকা দাস মণ্ডলদের দাবি, তাঁদের এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিলি করতেও দেওয়া হচ্ছে না। প্রধান ও উপপ্রধান নিজেদের দলের লোকদের দিয়ে এলাকায় ত্রাণ দিচ্ছেন। বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা। বেছে বেছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না।” ত্রাণ না পেয়ে ওই সব মানুষ জয়ী বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যদের বাড়ি ঘেরাও করছেন, কটূক্তি করছেন। সে কারণেই এ দিন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েতে আসেন বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যেরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজেপির সব পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান ও উপপ্রধান। দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পরে দু’জনেই জানান, ভবিষ্যতে পঞ্চায়েতের সব সদস্যকে নিয়েই এলাকার উন্নয়নের কাজ ও সরকারি কাজকর্ম করা হবে। পাশাপাশি এলাকার সমস্ত দুর্গত মানুষ যাতে ত্রাণ ঠিকমতো পান, সে দিকটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।
এরপরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। যদিও এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি প্রধান, উপপ্রধান। গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘কিছু মানুষ এ দিন রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতে এসে তাঁদের মাধ্যমে ত্রাণ বিলির দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের জানানো হয়েছে, সরকারি ত্রাণ সরকারি ভাবেই বিলি হবে। এ নিয়ে কোনও ঝামেলা বা অশান্তি হয়নি।’’
এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, ‘‘বিজেপি নোংরা রাজনীতির জন্যই এ সব করছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তেরাই সরকারি ত্রাণ পাচ্ছেন। কোনও অভিযোগ থাকলে আমাকে জানালে ক্ষতিয়ে দেখব।”