সুনসান: ভিড় কমেছে মেলা প্রাঙ্গণে। শনিবার ছবিটি তুলেছেন সুদীপ ঘোষ
দড়ির অস্থায়ী লকগেট থেকে মন্দিরের মূল ফটকের দূরত্ব ছিল মেরেকেটে ১০০ মিটার। আর তার মধ্যেই পুলিশ-প্রশাসনের পরিকল্পনাহীন ভাবে কয়েক হাজার ভক্তের স্রোতকে কয়েক মিনিট ধরে আটকে রাখাই বিপদ ডেকে এনেছিল বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে।
বৃহস্পতিবার রাতে কচুয়ার দুর্ঘটনার পরে এমনই অভিযোগ লোকনাথ মন্দিরের অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবকদেরও এমনটাই মত। মন্দিরে আসা ভক্তদের মূল স্রোতকে পরিকল্পনাহীন ভাবে শুধু আটকে রাখাই নয়, ভিড় নিয়ন্ত্রণে সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপরেও পুলিশ আধিকারিকেরা বেশি মাত্রায় সে দিন নির্ভরশীল ছিলেন বলেও অভিযোগ ওই প্রত্যক্ষদর্শীদের। এমনই এক প্রত্যক্ষদর্শী মনোজ রায়। যিনি কচুয়ার লোকনাথ মন্দিরের ‘লোকনাথ মিশন বিদ্যানিকেতন’ স্কুল এবং শিক্ষা প্রসার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। বেশ কয়েক বছর ধরে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে তিনি স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করেন। মনোজ জানান, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টো নাগাদ মন্দির অফিসের বারান্দায় গিয়ে তিনি দেখেন, নীচের রাস্তায় কাতারে কাতারে মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন লকগেট পেরোনোর জন্য। তাঁর কথায়, ‘‘পুরো পদ্ধতিটা ভুল ছিল। যে কোনও সময়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটবে ভেবে নীচে নেমে আসার মধ্যেই ঘটনাটি ঘটে যায়।’’
স্বেচ্ছাসেবকেরা অনেকে জানান, মূল গেট থেকে সরু রাস্তা ধরে এসে লকগেট পার করে মূল মন্দিরের পিছন দিক দিয়ে ভক্তদের স্নান মন্দিরে পাঠানো হচ্ছিল। যাঁদের পুজো দেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের মন্দির চত্বর থেকে বের করানোর জন্য প্রায় ৫-৬ মিনিট মূল গেট থেকে লকগেট পর্যন্ত অংশে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছিল। সেটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে দাবি মনোজ-সহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের। তাঁদের মতে, মূল স্রোতকে আটকে রাখাতেই সরু রাস্তায় চাপ বেড়েছিল।
আর লকগেটটি নিয়ন্ত্রণে ছিলেন কয়েক জন সিভিক ভলেন্টিয়ার ও মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকেরা। মনোজ বলেন, ‘‘পদপিষ্টের ঘটনার প্রায় ২০ মিনিট পরে প্রথমে একজন মাত্র উর্দিধারী পুলিশ আসেন। ততক্ষণে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা অচৈতন্য, জখম মানুষদের মেডিক্যাল ক্যাম্পে নিয়ে এসেছি। প্রথমে অ্যাম্বুল্যান্সও ঠিক মতো পাওয়া যায়নি। পুলিশের গাড়িতেই ঠেসেঠুসে ওই সব মানুষদের তুলে দিতে হয়েছিল।’’