—প্রতীকী চিত্র।
আততায়ীর গুলিতে নিহত অশোকনগরের গুমা ১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের বিজন দাসকে খুনের অভিযোগে পুলিশ বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছিল মূল অভিযুক্ত গৌতম দাসকে। রবিবার তাকে এলাকায় এনে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় গৌতম খুনের কথা কবুল করেছে। কী ভাবে বিজনকে খুন করেছিল, তা এ দিন গৌতম দেখিয়ে দেয় বলেও দাবি পুলিশের।
গুমা নিবেদিতাপল্লি এলাকায় পুলিশ এ দিন গৌতমকে আনতেই উত্তেজিত গ্রামবাসী ভিড় করতে থাকেন। বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। লাঠি উঁচিয়ে মানুষকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। রাস্তার পাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গৌতমকে দেখামাত্রই উত্তেজিত মহিলারা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি চিৎকার করতে থাকেন। কল্পনা সানা নামে এক মহিলার কথায়, ‘‘বিজন ছিলেন আমাদের মাথার ছাদ। গৌতম তাঁকে খুন করে আমাদের সেই ছাদটাই ভেঙে দিয়েছে।’’
এলাকায় ‘মাটি মাফিয়া’ হিসাবে পরিচিত ছিল গৌতম। তার বিরুদ্ধে এ দিন গ্রামবসীরা জোর করে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর আগেও গৌতম রেল কলোনিতে থাকত। বেআইনি মাটি কারবারে যুক্ত হয়ে ফুলেফেঁপে ওঠে। নিবেদিতাপল্লি এলাকায় দোতলা বাড়ি তৈরি করে। গ্রামবাসীদের অনেকের দাবি, রাজনৈতিক মদতেই গৌতমের এ হেন বাড়বাড়ন্ত। তার বেআইনি কারবারে বিজন কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলেই তাঁকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে।
অনেকেরই অভিযোগ, এই গৌতম একা নয়, আরও অনেকে জড়িত। পুলিশ তাদের আড়াল করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশি জেরায় গৌতম জানিয়েছে, বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে তার বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তার আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। আগ্নেয়াস্ত্রটি সে কোথা থেকে সংগ্রহ করেছিল, তদন্তকারীরা তা এখনও জানতে পারেননি। ঠিক কী কারণে বিজনকে খুন করা হল বা খুনের পরিকল্পনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। বারাসতের পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া বলেন, ‘‘গৌতম খুনের কথা স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে, ব্যক্তিগত শক্রুতা থেকেই এই খুন। গৌতমকে জেরা করে খুনের পরিকল্পনায় আরও কারা জড়িত, আগ্নেয়াস্ত্র সে কোথা থেকে পেয়েছিল— এ সব জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
বিজনের মেয়ে কোয়েনা বলেন, ‘‘পুলিশ এ বার নিশ্চয়ই গৌতম দাসকে জেরা করে তাকে কারা সাহায্য করেছিল, সেই নামগুলি খুঁজে বের করে তাদের গ্রেফতার করবে।’’