দক্ষিণ কোরিয়ার বরখাস্ত হওয়া প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করতে বাধা। ছবি: সংগৃহীত।
বরখাস্ত হওয়া দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেফতার করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ল সে দেশের পুলিশ। বরখাস্ত হওয়া প্রেসিডেন্টের বাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন তাঁর সমর্থকেরা। এমনকি ইওলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রেসিডেন্সিয়াল সিরিয়োরিটি সার্ভিস (পিএসএস)-এর কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা নাগাদ ইওলকে গ্রেফতার করতে পৌঁছে যান দক্ষিণ কোরিয়ার দুর্নীতি দমন শাখার উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশকর্মী এবং আইনজীবীরাও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভ সত্ত্বেও কোনও রকমে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুসারে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তারক্ষীরা। প্রায় ছ’ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ফিরে যায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, দেশে সাময়িক ভাবে সামরিক আইন (মার্শাল ’ল) জারি করার কারণে ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত। গত ৩ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইওল জানান, তিনি সারা দেশে সামরিক আইন বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল তাঁকে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন ইওল। তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উনের মদতে ক্ষমতা দখলের ছক কষছে বিরোধীরা। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, দেশকে কমিউনিস্ট আগ্রাসন থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করতে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করছেন। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, সামরিক আইন জারির মধ্যে দিয়ে দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চেয়েছিলেন ইওল।
সামরিক আইন জারির কথা ঘোষণার পর থেকেই ইওলকে বরখাস্তের দাবি তোলেন বিরোধীরা। পার্লামেন্টে বরখাস্তের প্রস্তাবও আনেন তাঁরা। গত ১৪ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোটাভুটিতে বরখাস্তের দাবির পক্ষেই অধিকাংশ ভোট পড়ে। বরখাস্ত হন ইওল।