প্রতীকী চিত্র।
ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায় ফের দুষ্কৃতীদের নিশানায় খোদ পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাতে জগদ্দল থানার আটচালা বাগান এলাকায় বোমাবাজি চলছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে দুষ্কৃতীরা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করেই বোমা ছোড়ে। বোমার আঘাতে জখম হন জগদ্দল থানায় কর্মরত রাজ্য পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের তিন কর্মী। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান, হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, খোদ পুলিশের উপরে হামলা চালাতেও যদি দুষ্কৃতীরা ভয় না পায়, তা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
এলাকা সূত্রের খবর, বুধবার গভীর রাতে ভাটপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আটচালা বাগান রোডে ওই ঘটনা ঘটে। সেখানকার বাসিন্দা এক বিজেপি নেতার বাড়ির কাছে একটি বোমা পড়ে। ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে আটচালা বাগান রোডে পৌঁছয় জগদ্দল থানার পুলিশ। পুলিশকর্মীরা যখন এলাকা পরিদর্শন করছেন, ঠিক তখনই পরের পর বোমা ছোড়া হতে থাকে তাঁদের লক্ষ্য করে। বোমার আঘাতে পীযূষকান্তি মাজি, দীপু বর্মণ ও সুশান্ত পোদ্দার নামে তিন পুলিশকর্মী জখম হন। পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে যে ভাবে বোমা ছোড়া হয়, তাতে ঘটনার ভয়াবহতা আরও বেশি হতে পারত বলেই মনে করছেন পুলিশকর্মীদের একাংশ।
গত মে মাসেই ভোটপর্ব মিটে গিয়েছে। কিন্তু জগদ্দল ও ভাটপাড়ায় দুষ্কৃতীদের উপদ্রব থামানো যায়নি। গত মঙ্গলবার রাতেই ভাটপাড়া থানা এলাকার বুড়ি বটতলায় একটি পরিত্যক্ত গাড়ির ভিতর থেকে তিনটি কৌটো বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগে থেকেই ভাটপাড়া ও জগদ্দল এলাকায় বোমার আঘাতে কখনও ছাত্র, কখনও বা রাস্তায় বসে থাকা চটকল শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মাস দেড়েক আগে বোমাবাজির ঘটনা থামাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের বোমার সামনে পড়ে যান ভাটপাড়া থানার তিন পুলিশকর্মী।
যাঁর বাড়ির সামনে প্রথমে বোমা পড়েছিল, উমাশঙ্কর সিংহ নামে সেই বিজেপি নেতার অভিযোগ, ‘‘হামলার পিছনে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রয়েছে। ওরা এতটাই বেপরোয়া যে, পুলিশকেও মানতে চাইছে না। এখন ওরা বোমা ছুড়ছে, আর পুলিশ পালাচ্ছে। তা হলে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা কে দেবে?’’ যদিও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘আমরা বার বারই পুলিশকে বলেছি, দল বা রং না দেখে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে।’’
উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটে গোটা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের একমাত্র ভাটপাড়া আসনটিই ধরে রাখতে পেরেছিল বিজেপি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, তৃণমূলের ভাটপাড়া দখলের চেষ্টা এবং বিজেপির ঘর আগলানো— এই দুইয়ের মাঝে পড়েই প্রশ্নের মুখে তাঁদের নিরাপত্তা।