এখানেই শিলিগুড়ি পুরসভার নতুন জল উত্তোলন কেন্দ্রের মূল পাইপের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। তার কাজ খতিয়ে দেখছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং পুরসভার মেয়ের পরিষদ। ছবি: বিনোদ দাস
শহরে জল সরবরাহ বন্ধের প্রথম দিন পুরসভা কোথায় জলের ট্যাঙ্ক দিচ্ছে সেই খোঁজখবর নিয়ে সেখানে গিয়ে লাইন দিয়ে জল নিতে হল বাসিন্দাদের অনেককে। কাউকে হাতে গোনা জলের পাউচ নিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হল। শুক্রবার এমনই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কাটালেন শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দারা। আগের দিন রাত ৮টা পর্যন্ত বাড়তি সময় জল সরবরাহ করেছিল পুরসভা। তাই এ দিন অনেকটাই পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে তারা। আজ, শনিবারও জল বন্ধ থাকছে। তবে আজ সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা।
এ দিন থেকেই শহরে জারবন্দি জল বিক্রির ক্ষেত্রে কালোবাজারি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের একাংশের।নতুন জল উত্তোলন কেন্দ্র (ইনটেক ওয়েল) চালু করতে তার পাইপলাইন পুরনো ইনটেক ওয়েলের পাইপলাইন তথা জল তোলার মূল পাইপলাইনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, যাতে জল তুলে তা ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে পরিস্রুত করতে পাঠানো যায়। এই কাজের জন্য দু’দিন জল সরবরাহ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে শিলিগুড়ি পুরসভা। সেই মতো শুক্র এবং শনিবার জল সরবরাহ বন্ধ থাকার কথা।
মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘কোথাও কোনও সমস্যার কথা শুনিনি। সব ওয়ার্ডে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। শীতকাল বলে জলের চাহিদা কিছুটা কম থাকে। শনিবার দিনটা কাটলেই আর কোনও সমস্যা হবে না।’’ তবে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, শনিবার সকালের মধ্যেই কাজ সেরে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল থেকেই পরিকল্পনা মাফিক পানীয় জল সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে পুরসভার ২৫টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। প্রতিটি ৩ হাজার লিটারের। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর ৫ হাজার লিটারের ৫টি ট্যাঙ্ক দিয়েছে। ২ হাজার লিটারের ৩৫টি পিভিসি ট্যাঙ্কে জল ভরে গাড়িতে ে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ওয়ার্ডে পানীয় জলের পাউচ বিলি করা হচ্ছে বরো ভিত্তিতে। ওই দিন এক লক্ষ পাউচ বিলি করা হয়েছে। এ দিন আরও এক লক্ষ বিলি করা হয় বলে জানান ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা অমিত জৈনের দাবি, ‘‘পুরসভার তরফে যে পরিমাণ জল ওয়ার্ডে দেওয়া হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। যতটা জল দরকার সেই হিসাবে কিছুই দিতে পারছে না। তাই এ দিন থেকেই শহরে জল মাফিয়ারা সক্রিয় হয়েছে। ৩০ টাকার জার ৫০ টাকা হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দারাই অভিযোগ করেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘একটি ওয়ার্ডে ৩ হাজার লিটারের ট্যাঙ্ক পাঠালে কত জন পাবে। একটা পরিবারে অন্তত ১৫ লিটার জল দরকার।’’এ দিন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে শিশু উদ্যানের সামনে, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাবুপাড়া, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে টিকিয়াপাড়ার মতো বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের ট্যাঙ্ক গেলে বাসিন্দাদের ভিড় করে জল নিতে দেখা গিয়েছে। কোথাও জলের পাউচ নিতে হুড়োহুড়ি পড়ে। সনকা বেওয়া, জসমিন মাঝি, দীপক মাইতিদের মতো বাসিন্দারা বলেন, জল না পেলে সমস্যা হবে। তাই জারে, বোতলে, বালতিতে জল নিয়ে রাখছেন তাঁারা। দু’দিন জল বন্ধ থাকার কথা বলা হয়েছে। সময় বেশি লাগলে দুর্ভোগ বাড়বে বলে তাঁদের ভয়।পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত এ দিন দুপুরে ফুলবাড়িতে কাজ দেখতে যান। তিনি বলেন, ‘‘শনিবার সকালের মধ্যেই কাজ সেরে জল সরবারাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’’