গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
ঘুষ এবং প্রতারণার অভিযোগে আমেরিকা গৌতম আদানিকে কাঠগড়ায় তোলায় আদানি গোষ্ঠীর একাধিক সংস্থার মূল্যায়ন কমিয়ে ‘নেগেটিভ’ বা নেতিবাচক করল এসঅ্যান্ডপি। যার অর্থ, তাদের ধার দেওয়া এখন ঝুঁকিপূর্ণ। টাকা শোধ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। মূল্যায়ন বহুজাতিকটির দাবি, যে ভাবে আমেরিকার বিচার বিভাগীয় দফতর এবং শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক এসইসি গৌতম এবং তাঁর ভাইপো সাগরের (সঙ্গে আরও কয়েকজন আধিকারিক) বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, তাতে গোষ্ঠীর সার্বিক ভাবমূর্তিতে ধাক্কা লাগবে। ফের প্রশ্নের মুখে পড়বে সংস্থাগুলির পরিচালন ব্যবস্থা। তাদের বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ কঠিন হতে পারে। এই আশঙ্কার কারণেই মূল্যায়ন ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত।
গত বছর জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট সামনে আসার পরেও ধাক্কা খেয়েছিল আদানিদের ভাবমূর্তি। প্রশ্ন উঠেছিল পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে। রিপোর্টে গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দর কৃত্রিম ভাবে বাড়ানো এবং বিদেশে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ তোলা হয়। যা নস্যাৎ করেছিলেন গৌতম। এ বারও গোষ্ঠী বিবৃতিতে বলেছে, ভিত্তিহীন অভিযোগ। তারা কখনই নিয়ম ভেঙে ব্যবসা করে না।
তবে বৃহস্পতিবার ধস নেমেছিল আদানিদের শেয়ারে। নথিভুক্ত ১০টি সংস্থার শেয়ারের দামই ১০.৪০% থেকে ২২.৬১% পড়ে গিয়েছিল। বাজারে তাদের মোট শেয়ার মূল্য কমে গিয়েছিল ২.১৯ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু শুক্রবার লেনদেনের শুরুতে পতন বহাল থাকলেও, পরে গোষ্ঠীর ৬টি সংস্থার শেয়ার দর বাড়ে। বিরোধীদের অবশ্য প্রশ্ন, কোন যাদুবলে বাড়ল দাম? বিদেশি রাষ্ট্রের এমন গুরুতর অভিযোগের পরেও কারা কিনছে আদানিদের সংস্থার শেয়ার? বিষয়টা খতিয়ে দেখা দরকার। বিশেষজ্ঞ বিনয় আগরওয়াল বলেন, “এক দিনের মধ্যে শেয়ার দর বাড়ল বটে। তবে কতটা স্থায়ী হবে সন্দেহ আছে।’’
একাংশের দাবি, সন্দেহের কারণ স্পষ্ট এসঅ্যান্ডপি এবং মুডি’জ়-এর রিপোর্টে। সেখানে বলা হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর সব সংস্থার উপরেই এই ঘটনার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তাদের শেয়ার বা ঋণপত্রের বাজার থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। পুরনো লগ্নিকারীদের আস্থা চোট খেতে পারে। নতুনরা দূরে সরে থাকতে পারেন। ব্যাঙ্ক-সহ আর্থিক সংস্থাগুলি রাশ টানতে পারে ঋণে। বেড়ে যেতে পারে মূলধন সংগ্রহের খরচ।