প্রস্তুতি: তৈরি রাখা হচ্ছে কর্মীদের। সাগরদ্বীপে। নিজস্ব চিত্র
দুর্যোগের আশঙ্কায় দিন কাটছে সুন্দরবনের মানুষের। মাঝে মধ্যে থেকে থেকে বৃষ্টি হলেও ঝোড়ো হাওয়া ওঠেনি মঙ্গলবার সন্ধে পর্যন্ত। কিন্তু কখন কী ঘটে যায়, সেই আশঙ্কা কাটছে না আয়লা, আমপান, ইয়াসের তাণ্ডবের সাক্ষী থাকা মানুষজনের।
গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, সন্দেশখালিতে বেশ কিছু জায়গায় নদীবাঁধে ইতিমধ্যেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের স্বরূপকাটি স্লুস গেটের পাশের ইটের রাস্তা কয়েকশো ফুট অংশ জুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মঙ্গলবার।
দুলদুলি পঞ্চায়েতের প্রধান চঞ্চল মণ্ডল বলেন, ‘‘রাস্তার অবস্থা ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। অফিসার এসে দেখে গিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব রাস্তার কাজ করা হবে।’’
রূপমারি পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, উত্তর রূপমারি খেয়াঘাটের পাশে প্রায় ২০০ ফুট অংশ জুড়ে বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে কয়েকদিন আগে। যা ক্রমশ বাড়ছে। এ ছাড়া, পূর্ব খেজুরবেড়িয়া গ্রামের মৌখালি স্লুস গেটের কাছে প্রায় ২০০ ফুট অংশ জুড়ে ধস নেমেছে। প্রধান সনাতন সর্দার বলেন, ‘‘বাঁধের মেরামতির কাজ যাতে দ্রুত করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’
সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট ১ পঞ্চায়েতের ৬ নম্বর বাউনিয়া এলাকায় বিদ্যাধরী নদীবাঁধের প্রায় ৪০০ ফুট অংশে ধস নেমেছে সোমবার বিকেলে। সন্দেশখালি ১ বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বলেন, ‘‘সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে এবং আপাতত পঞ্চায়েতের তরফে মেরামতি কাজ চলছে। টানা বৃষ্টির জেরে মাটি নরম হয়ে এই বিপত্তি।’’ তিনি জানান, প্লাবিত হতে পারে, এমন জায়গাগুলির উপরে নজর রাখা হয়েছে। ফ্লাড শেল্টারগুলি সাফসুতরো করা হয়েছে।
বসিরহাটের মহকুমাশাসক মৌসম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাইকে প্রচার চলছে। নদীবাঁধ কেমন আছে, তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণের খাবার, পলিথিনের ব্যবস্থা হয়েছে। সেচ ও বিদ্যুৎ দফতর-সহ প্রশাসনিক সব স্তরে তৈরি থাকার জন্য বলা হয়েছে।’’
হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী বলেন, ‘‘জলমগ্ন হলে দ্রুত জল নিকাশির জন্য স্লুস গেটগুলি ঠিক করা হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’’
মিনাখাঁর বিডিও শেখ কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, কিছু ভেড়ির মালিক জমা জল সরাতে দিচ্ছেন না। পঞ্চায়েত প্রধান এবং ওই সমস্ত ভেড়ি মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। যদি এলাকা আবার প্লাবিত হয়, তা হলে দ্রুত জল নিকাশি ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফেরিঘাটগুলিতেও নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুন্দরবনের নিচু জায়গাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। জলমগ্ন হলে যাতে দ্রুত জল সরানো সম্ভব হয়, সে জন্য পাম্প মেশিন আনা হয়েছে। সন্দেশখালি ২ বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত প্রধানদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।’’