প্রতীকী ছবি।
দীপাবলির সকালে ভাটপাড়ায় বোমা ফেটে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কিত ২৮ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন প্রেমচাঁদ নগর। সেখানে প্রতিদিনই সকালে এলাকার শিশুরা রেললাইনের ধার বরাবর একচিলতে পায়ে চলার পথের ধারে খেলাধুলো করে। ওই জায়গায় আরও বোমা লুকোনো আছে কি না, আতঙ্ক এখন তা নিয়েই। নিখিল পাসোয়ানের (৮) মতো আর কারও প্রাণ যাতে না যায়, সেই আতঙ্কেই বুধবার সন্তানদের ঘরছাড়া করতে চাননি অধিকাংশ অভিভাবক।
বোমার আঘাতে নিখিলের সঙ্গী নৈতিক সাউয়ের হাত উড়ে গিয়েছে। তবে সে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা টিনা মাল ও মুন্নি সিংহেরা বললেন, ‘‘নিখিলের মৃত্যু আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। ওখানে তো আমাদের ছেলেমেয়েরাও খেলে। দুটো নিষ্পাপ ছোট ছেলে। বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলতে যাওয়ায় কী ভয়াবহ সর্বনাশ হল! আমাদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও তো এমন ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনও দিন!’’
ভাটপাড়ায় বোমা বিস্ফোরণে শিশু-মৃত্যুর ওই ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কারা, কী উদ্দেশ্যে রাস্তার ধারে বোমা ফেলে গিয়েছিল, তা নিশ্চিত ভাবে জানতে পারেনি পুলিশ। ওই ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে।
অন্য দিকে, জগদ্দলের রিলায়েন্স চটকলের কুলি লাইনের কাছ থেকেও দু’টি বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে এ দিন স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। রেল পুলিশের তরফে কাঁকিনাড়া থেকে জগদ্দল স্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের দু’দিকে পুলিশ কুকুর নিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ছিল বম্ব স্কোয়াড-ও। এ দিন চার নম্বর লাইনের ধারে রেলের জমিতেও তল্লাশি চালানো হয়। রেল পুলিশের আধিকারিকেরা জানান, ঘটনার তদন্ত ব্যারাকপুর কমিশনারেট করলেও রেলের পক্ষ থেকে এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং তদন্তকারীদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করা হবে।
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পক্ষ থেকে এলাকায় একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর প্রচার করে বলা হয়েছে, অপরাধমূলক বা সন্দেহজনক কিছু দেখলেই তা ওই নম্বরে জানানো যাবে। এ দিন নিখিলের পরিবারের হাতে এক লক্ষ টাকা তুলে দেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। তিনি এ দিনও বলেন, ‘‘আগে জুয়ার ঠেক বন্ধ করতে হবে পুলিশকে। তবে এই ধরনের অপরাধ কমবে।’’