—প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ দিন ধরেই এলাকার লোকজনের কাছে ‘ত্রাস’ হয়ে উঠেছিল বছর আটত্রিশের যুবক। সরস্বতী পুজোর রাতে আচমকাই স্থানীয় ক্লাবে এবং বাসিন্দাদের উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় সে। অভিযোগ, এর পরে স্থানীয়দের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় ওই দুষ্কৃতীর। বুধবার খড়দহের রহড়ার ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম মানিক বিশ্বাস ওরফে বিজিত। বছর কয়েক আগে এলাকার এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি সেই মামলায় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের এলাকায় বিজিত অত্যাচার শুরু করেছিল বলে অভিযোগ।
ব্যারাকপুরের উপ-নগরপাল (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনাওয়ানে বলেন, ‘‘ওই যুবকের বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক সমাজবিরোধী কাজের অভিযোগ ছিল। তাই তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। এ বার গণপিটুনির তদন্ত শুরু হয়েছে। কারণ, আইন কখনওই কেউ নিজের হাতে নিতে পারেন না।’’
সূত্রের খবর, রহড়ার রুইয়া নালির মাঠ এলাকাতেই থাকত বিজিত। স্থানীয় ক্লাবের তরফে প্রতি বছরের মতো এ বারও সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। সন্ধ্যায় ক্লাবের ভিতরে বসেছিলেন সম্পাদক তাপস দত্ত-সহ কয়েক জন সদস্য। অভিযোগ, তখন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিজিত ক্লাবে ঢুকে পড়ে। তার হাতে ছিল ক্ষুর। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সেটি নিয়ে তাপসের উপরে এক প্রকার ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজিত। নিজেকে সরানোর চেষ্টা করলেও তাপসের ঘাড়ে আঘাত করে ওই দুষ্কৃতী। রক্তাক্ত অবস্থায় তাপস-সহ বাকিরা কোনও মতে সেখান থেকে পালান।
অভিযোগ, এর পরে ক্লাবের টিভি, ক্যারম বোর্ড, চেয়ার-টেবিল, জানলার কাচ-সহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে বিজিত। ওই ক্লাব সংলগ্ন বাড়িতে থাকেন কবিতা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ভাঙচুরের শব্দে বেরিয়ে ক্লাবের সামনে আসতেই, বিজিত লাফিয়ে এসে মাথায় ক্ষুর চালিয়ে দেয়। আমার চিৎকারে সবাই ছুটে আসেন।’’ ওই মহিলার স্বামী আশুতোষ ঘোষও বেরিয়ে বাধা দিতে গেলে তাঁর মাথা এবং গলার একাধিক জায়গায় বিজিত ক্ষুর চালিয়ে দেয় বলে
অভিযোগ। তত ক্ষণে এলাকাবাসী ক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে ওই দুষ্কৃতীকে তাড়া করেন।
সূত্রের খবর, ক্লাবের পাশের একটি গলিতে ঢুকে পড়লেও বিজিতকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকলে তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন। প্রশ্ন তোলেন, কেন সন্ধ্যার
পরে রাস্তায় সে দাঁড়িয়ে থাকলে মহিলারা ভয়ে যেতে পারেন না, কেন যখন তখন অকারণে লোকজনকে ধরে মারধর করা হবে? অভিযোগ এর পরেই এক দল ক্ষিপ্ত জনতা গলির মধ্যেই বিজিতকে ফেলে পেটাতে শুরু করে। খবর পেয়ে রহড়া থানার পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে
ব্যারাকপুর বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা বিজিতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ওই দম্পতিকেও হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।