এই কচুবাগানেই পাওয়া যায় যুবকের দেহ। ছবি: নির্মল বসু।
একটা ফোন পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বছর চব্বিশের যুবক। আর ফেরেননি। শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই কচু বাগান থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হল। স্বরূপনগর থানার তেঁতুলিয়া খালপাড় এলাকার ঘটনা। যুবককে খুন করা হয়েছে বলেই অনুমান পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম উৎপল বিশ্বাস।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উৎপল টালিগঞ্জ আইটিআইয়ে পড়াশোনা করতেন। করোনা পরিস্থিতির জেরে বাড়ি ফিরে আসেন। এ দিন সকালে বাড়ির কাছেই খাল পাড়ে কচু বাগানের মধ্যে উৎপলকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন পড়শি এক মহিলা। পুলিশ সূত্রের খবর, উৎপল সুদের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি মাদক নিতেন বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই সংক্রান্ত কোনও কারণে বা পুরোনো শত্রুতার জেরে খুন হতে পারে বলে মনে করেছে পুলিশ। পরিবার সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক গোলমালে জড়িয়ে পড়েছিলেন উৎপল। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগ হয়। সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য উৎপলকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ।
পুলিশে জানিয়েছে, উৎপলের গলায় ক্ষত ছিল। মনে করা হচ্ছে, গলায় কোনও ধারাল অস্ত্র ঢুকিয়েই তাঁকে খুন করা হয়েছে। যেখানে দেহ পড়েছিল, সেখানে রক্তের চিহ্ন ছিল না। ক্ষতস্থানের রক্তও জমাট বেধে ছিল। তাছাড়া, মৃতদেহ সাদা হয়ে গিয়েছিল। তা দেখে পুলিশের ধারণা, জল জমে আছে এমন কোনও জায়গায় বিকেলে উৎপলকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়। রাতে দেহ এনে এখানে ফেলে দেওয়া হয়। হয়ত খালের জলেই দেহ ফেলার পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতীদের। কিন্তু কোনও কারণে বাধা পেয়ে কচুবাগানেই দেহ ফেলে পালায় তারা। স্বরূপনগরের এসডিপিও অভিজিৎ সিংহ মহাপাত্র বলেন, “মৃতের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। উৎপলের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
উৎপল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য ছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা রমেন সর্দার বলেন, “আমাদের দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মীকে খুন করা হল। তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করছি।” বিজেপি নেতা দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “একটা বাচ্চা ছেলে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা চাই দোষীদের শাস্তি হোক।”