হাতে-কলমে: বিপর্যয়ের সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এক পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
তিন দিনের সফরে চিকিৎসকদের একটি দল এসেছিলেন সুন্দরবন ভ্রমণে। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের কয়েক জন বন্ধুবান্ধব। সকলেই যুক্ত সমাজসেবার কাজে। ভ্রমণের সঙ্গে সঙ্গে কিছু সামাজিক কাজেও হাত লাগাল ‘ক্ষণকাল’ নামে চিকিৎসক ও সমাজকর্মীদের দলটি। পাশাপাশি, ঝড়খালি কোস্টাল থানায় গিয়ে পুলিশ কর্মীদের বিপর্যয়ের সময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন তাঁরা। দলে ছিলেন অসীম নাথ। জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলেন সেন্ট জন অ্যাম্বুল্যান্সের খড়্গপুর শাখার এই কর্মী।
জল-জঙ্গলে ঘেরা সুন্দরবন এলাকায় সাপে কাটার রোগীকে কী ভাবে প্রাথমিক শুশ্রূষা করা হবে, হঠাৎ কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কী ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে— এ সব নিয়ে তালিম দেন চিকিৎসকেরা। দুর্ঘটনাগ্রস্তকে কী ভাবে তাৎক্ষণিক ভাবে সাহায্য করা যায়, তা-ও দেখানো হয় হাতে-কলমে।
সোমবার এসেছিল সতেরো জনের দলটি। পাঁচ চিকিৎসক ছাড়াও ছিলেন বেশ কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মী, সমাজকর্মী। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করছেন সমরেন্দ্রনাথ রায়। তিনি বলেন, ‘‘সুন্দরবনের মানুষের কাছে সাপের কামড় একটা বড় সমস্যা। প্রতি বছর বহু মানুষ এই এলাকায় সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন। এই পরিস্থিতি কী করা দরকার, তা নিয়ে এলাকার মানুষ এবং পুলিশ কর্মীদের প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’’
অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ কার্তিক নাসিপুরী বলেন, “রাস্তায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কী ভাবে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সব জানা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে প্রাণহানির আশঙ্কা কমে।”
দলের আর এক চিকিৎসক সুশান্ত নস্কর বলেন, “ভ্রমণের পাশাপাশি এ ধরনের কাজের সুযোগও আমরা হাতছাড়া করিনি। পুলিশ কর্মী, সাধারণ মানুষ— সকলেই আশা করি কিছুটা উপকৃত হয়েছেন।”
ঝড়খালি কোস্টাল থানার ওসি প্রদীপ রায়ের মতে, ‘‘সকলেই উপকৃত হলাম। এ সব শিক্ষা মেনে চললে অনেকের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে।”