ছবি এএফপি।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে বিপর্যস্ত সুন্দরবনবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাপন। সোমবারও হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল। বিঘ্নিত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এমনকী বিদ্যুৎ নেই হিঙ্গলগঞ্জ ও হেমনগর থানাতেও। ব্যাহত হচ্ছে প্রাত্যহিক কাজ কর্ম।
এ দিন সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে দেখা গেল শনিবারের ঝড়ের জেরে বহু রাস্তাতেই বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে রয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের নেবুখালি-হাসনাবাদ রুটে যেমন এ দিনও চালু হয়নি বাস চলাচল। গাছ পড়ে এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যান চলাচল বিঘ্নিত হয় দুলদুলি থেকে হেমনগর যাওয়ার রাস্তায়ও।
এ দিন বিভিন্ন জায়গায় এনডিআরএফের দল এবং স্থানীয়রা রাস্তার উপরে পড়ে থাকা গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে দেন। কয়েকটি জায়গায় দুপুরের পর থেকে ছোট যাত্রিবাহী গাড়ি চলতে শুরু করে।অনেক জায়গাতেই রাত পর্যন্ত যানচলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ফলে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবহত হচ্ছে কাজকর্ম। বিশেষ করে পানীয় জলের সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক এর সামসেরনগরের বাসিন্দা সবিতা পাত্র, নিতাই দাসরা বলেন, ‘‘রবিবার থেকে পানীয় জলের সমস্যা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ জলের ট্যাঙ্ক থেকে জল পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দূরে টিউবওয়েল থেকে জল আনতে হচ্ছে। সেখানেও লম্বা লাইন।’’
সন্দেশখালির মনিপুরের বাসিন্দা অনুপম ঘোষ, মিনু দাসরা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকার জেরে টিউবওয়েলের জল ফুটিয়ে খেতে হচ্ছে। জানি না বিদ্যুৎ পরিষেবা কবে স্বাভাবিক হবে এবং পানীয় জল পাওয়া যাবে।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে অবশ্য খবর, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যে পানীয় জলের পাউচ পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়েছে।
বিদ্যুৎ পরিষেবা কবে স্বাভাবিক হবে তা বলতে পারছেন না বিদ্যুৎ দপ্তরের অধিকারিকরাও। বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে পাড়ায় পাড়ায় জেনারেটর চালিয়ে এক শ্রেণির মানুষ ফোনে চার্জ দেওয়ার ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন।
হিঙ্গলগঞ্জের মামুদপুরের বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল, সুজন দাস, রিতা মৃধারা বলেন, ‘‘জরুরি প্রয়োজনে ফোন দরকার। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় ফোন বন্ধ হয়ে রয়েছে। চার্জ দেওয়ার জন্য কেউ দশ, কেউ কুড়ি টাকা করে নিচ্ছে। বাধ্য হয়ে সেই টাকা দিয়েই চার্জ দিতে হচ্ছে।’’