ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
রবিবার রাত পোহালেই মেয়েটির জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, মাধ্যমিক। অথচ, তার এক দিন আগেও মিলল না অ্যাডমিট কার্ড। পরীক্ষা দিতে পারবে না এই আতঙ্কে আত্মহত্যারও চেষ্টা করে ওই পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবারের বাসুলডাঙা এলাকায়। এই ঘটনার কথা জানতে পেরে দ্রুত পদক্ষেপ করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ছাত্রীকে দ্রুত অ্যাডমিট কার্ড পাঠানোর জন্য শিক্ষা দফতরকে আবেদন জানিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরের তরফে ওই স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শীঘ্রই অ্যাডমিট কার্ড পেয়ে যাবেন ওই ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসুলডাঙার বাসিন্দা মীরজানা খাতুন ডায়মন্ড হারবার গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সে। বাবা সালামত পেশায় দিনমজুর। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্কুলে গিয়ে মীরজানা জানতে পারে তার মাধ্যমিক পরীক্ষা অ্যাডমিট কার্ড আসেনি। অথচ সহপাঠীরা তা পেয়ে গিয়েছে। তার অ্যাডমিট কার্ড এল না কেন? প্রশ্ন নিয়ে সে প্রধান শিক্ষিকার কাছে গিয়েছিল। তাঁর কথামতো দরখাস্তে সইও করে সে। কিন্তু শনিবার কেটে গেলেও অ্যাডমিট কার্ড আর হাতে আসেনি। এর পরই ভেঙে পড়ে ওই ছাত্রী।
শনিবার রাতে ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে সে। ছাত্রীর বাবা ও মা বুঝতে পেরে মেয়েকে আটকান। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এই খবর জানতে পারেন শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলাম এবং ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে। তাঁরাই সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এর পর তড়িঘড়ি ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সাংসদের প্রতিনিধি। শিক্ষা দফতরকেও সংশ্লিষ্ট স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে অ্যাডমিট কার্ডের ব্যবস্থা করে দিতে বলা হয়। খবর পেয়ে এসডিপিও মিতুন দে খাতা, ডায়েরি, কলম ও ফল নিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সেই সঙ্গে সোমবার পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন।
মইদুল বলেন, ‘‘সাংসদ যে ভাবে দ্রুততার সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর জন্য তিনি উদ্যোগী হলেন তার জন্য আমরা ভীষণ খুশি। তাঁর এই উদ্যোগে নতুন করে আশার আলো দেখছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মীরজানা৷’’
অন্য দিকে শুধু মীরজানাই নন, এ রকম একাধিক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্তও অ্যাডমিট কার্ড হাতে পায়নি বলে খবর। রবিবার দুপুরে সল্টলেকের ডিরোজিও ভবনে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বেশ কয়েকজন পড়ুয়া ও অভিভাবক।