মারধরে আহত পড়ুয়া ভর্তি হাসপাতালে। — নিজস্ব চিত্র।
চলন্ত ট্রেনে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং তার মাকে বেধড়ক মারধর করে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ। ঘটনায় অভিযুক্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুটিয়ারি বিএম বিদ্যাপীঠ স্কুলের এক দল ছাত্র। অভিযোগ, কয়েক দিন আগে এক পরীক্ষার্থীর বোনকে কটূক্তি করা নিয়ে বিএম স্কুলের ছেলেদের সঙ্গে বেতবেড়িয়া সংগ্ৰামী নগর বিদ্যাপীঠের পড়ুয়াদের মধ্যে গোলমালের সূত্রপাত। সে দফায় শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় ঝামেলা মিটলেও মঙ্গলবার নতুন করে তা শুরু হয়। ঘটনাটি ঘটেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১টা ১০-এর আপ ক্যানিং লোকালে।
অভিযোগ, গত তিন ফেব্রুয়ারি ইভটিজিং করা নিয়ে বেতবেড়িয়া সংগ্ৰামী নগর বিদ্যাপীঠের ছাত্রদের সঙ্গে ঘুটিয়ারি শরিফ বিএম বিদ্যাপীঠের কয়েক জন ছাত্রের বচসা হয়। বেতবেড়িয়া সংগ্ৰামী নগর বিদ্যাপীঠের ছাত্র তথা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দীপ বৈরাগী প্রতিবাদ করে। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সে দিন হাতাহাতি বেধে যায়। স্কুলের শিক্ষকরা এসে বিষয়টি মিটমাট করেন। সে যাত্রায় ঝামেলা মিটলেও মঙ্গলবার আবার তা মাথাচাড়া দেয়। অভিযোগ, ঘুটিয়ারি শরিফ বিএম বিদ্যাপীঠের ছাত্ররা বহিরাগত কয়েক জনকে নিয়ে আপ ক্যানিং লোকাল ট্রেনের মধ্যে দীপ ও তার মায়ের উপর আক্রমণ করে। দীপের পাশাপাশি, মারামারি থামাতে যাওয়া তার মায়ের উপরও হামলা হয়। আহত অবস্থায় দীপকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দীপের মা মনিকা বৈরাগী বলেন, ‘‘ছেলেকে নিয়ে ট্রেনে উঠেছি, এর পর চলন্ত ট্রেনে কয়েক জন ছেলে ওঠে। আমার ছেলেকে মারধর শুরু করে। আমি বাঁচাতে গেলে আমাকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে ছেলের মাথায় বার বার ঘুষি মারতে থাকে। আমার ছেলে পড়াশোনায় ভাল, ওরা পড়াশোনা করে না। সেই থেকে রাগ। দু’টি মেয়েকে ঠেলা দিয়ে আমার ছেলের গায়ে ফেলেছিল বলে শুনেছি। সেটা থেকেই গোলমাল শুরু হয়। আজ (মঙ্গলবার) পরীক্ষা দিয়ে বেরোনোর সময় চলন্ত ট্রেনে ছেলে আর আমাকে মারল।’’
দীপের এক বন্ধু বলে, ‘‘আগের দিন দীপের বোনকে ওরা খারাপ কথা বলে। দীপ প্রতিবাদ করেছিল। তখন দীপকে মারধর করে। স্যরেরা মিটমাট করে দিয়েছিলেন। আজ আবার দীপ আর দীপের মাকে মারধর করেছে। এত মেরেছে যে দীপ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল।’’ কেন এমন ঘটনা ঘটল তার তদন্ত করছে ক্যানিং জিআরপি। দীপের বন্ধুদের অভিযোগ, মঙ্গলবার মারতে মারতে দীপকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই ঘটনায় অভিভাবকরা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। দীপের মায়ের দাবি, তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।