সীমা: ও প্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের নাগরিকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
স্বাস্থ্য সচেতনতা বড় বালাই। আবেগও তার সামনে ফিকে।
অন্য বছরগুলিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে দুই বাংলার মানুষ যে ভাবে উৎসব-অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন, এ বার তা ছিল তুলনায় ম্রিয়মান। উৎসবের আয়োজনে কাটছাঁট করা হয়েছিল অনেকটাই। দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীদের উপস্থিতিও ছিল তুলনায় কম।
তবে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতোই। করোনা পরিস্থিতির জন্য এ বার আর দু’দেশের মানুষকে সীমানা পেরোনোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ উৎসবে সামিল হতে চেয়ে দূরদুরান্ত থেকে সীমান্তে এলেও নো ম্যানস ল্যান্ডে তাঁরা ঢুকতে পারেননি। ও দেশের বিজিবি ও পুলিশ তাঁদের বেনাপোল সীমান্তেই আটকে দেন। এ দেশ থেকে এ দিন বিএসএফ পুলিশ বেনাপোলে কাউকে যেতে দেয়নি। এত দিন সীমান্তের ভাষা উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল, দু’দেশের মানুষের মধ্যে ভাব বিনিময়। গল্পগুজব, আলিঙ্গন, একত্রে ছবি তোলা। সে সব ঘাটতি থেকে গেল এ বার। শ’খানেক বাংলাদেশি অতিথি অবশ্য পেট্রাপোলের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। এ দেশের অতিথিরা অবশ্য বেনাপোলে যাননি। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা নো ম্যানস ল্যান্ডে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন, তাঁরা খুশি হন।
এ দিন এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, জাতীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিলউদ্দিন। এ দেশের পক্ষ থেকে ছিলেন বনগাঁর পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য, বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ। স্বপন বলেন, ‘‘আজকের দিনটি আমাদের খুব আনন্দের। করোনার মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ দিন যা হয়েছে, সেটাও অনেক পাওয়া।’’ ভোটের আবহে একুশের অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। মঞ্চে, তোরণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকলেও কেন এ দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবি রাখা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল। যুব তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি কোনও দিন ভাষা উৎসবে আসে না। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ওরা অভিযোগ করছে।’’