Matua Votebank

জ্যোতিপ্রিয়ের অনুপস্থিতি প্রভাব ফেলবে না মতুয়া-ভোটে: মমতা ঠাকুর

বনগাঁ, হাবড়ার মতো এলাকায় মতুয়াদের ভূমিকা যথেষ্টই। তৃণমূল সূত্রের খবর, মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর সেতুবন্ধের কাজ করেছিলেন মূলত বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় যে কোনও ভোটেই মতুয়া সমাজের ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ। বিশেষ করে বনগাঁ, হাবড়ার মতো এলাকায় মতুয়াদের ভূমিকা যথেষ্টই। তৃণমূল সূত্রের খবর, মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর সেতুবন্ধের কাজ করেছিলেন মূলত বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই। ২০০৮ সাল থেকে যে কোনও ভোটের আগে মতুয়া সমাজের মানুষকে তৃণমূলের অনুকূলে টানতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এসেছেন জ্যোতিপ্রিয়।

Advertisement

রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন তিনি প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। (অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবার তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করাতে হয়েছে)। এ দিকে, বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে। কিন্তু মতুয়া ভোটের কী হবে? রাজনৈতিক মহলে প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর দাবি করলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের অনুপস্থিতিতে ভোটে মতুয়াদের মধ্যে কোনও প্রভাব পড়বে না।

মঙ্গলবার জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে মমতা ঠাকুর গিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়ায়। সেখানে বলেন, ‘‘পুজোয় বালুবাবু (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) উপস্থিত থাকলে আরও বেশি আনন্দিত হতাম। তাঁর অভাব বোধ করছি, এটা বাস্তব। তবে বালুবাবুর অনুপস্থিতি ভোটে মতুয়াদের মধ্যে প্রভাব ফেলবে না। কারণ, ভোট কোনও ব্যক্তিগত বিষয় নয়। দল সকলের ঊর্ধ্বে। লোকসভা ভোটে এ বার তৃণমূল অনেক ভাল ফল করবে।’’ পাশাপাশি তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এনেছিলেন বালুবাবুই। ঠাকুরবাড়ির উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা আছে। তাঁর অবদান মতুয়া সমাজের মানুষ ভুলতে পারবেন না।

Advertisement

মমতা জানান, ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে বিজেপি মতুয়াদের একাংশের ভোট কেটে নিয়েছিল। যদিও তাঁর মতে, মতুয়ারা এখন বুঝতে পেরেছেন, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। মমতার কথায়, ‘‘কেন্দ্র বা বিজেপি সিএএ চালু করতেই পারবে না। পারলে এত দিন করে দিত।

মমতা ঠাকুরের মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘‘মতুয়ারা জানেন, ঠাকুরবাড়ির এবং মতুয়াদের প্রকৃত উন্নয়ন যদি কেউ করে থাকেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের নিরিখে মতুয়ারা ভোট দেবেন।’’

মমতা ঠাকুরের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘মতুয়ারা মমতা ঠাকুর বা তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তাঁরা বিজেপির সঙ্গে আছেন। সিএএ যখন আইন হয়েছে, কার্যকর হবেই। মমতা ঠাকুরেরা মতুয়া ও উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব পেতে বাধা দিচ্ছেন।’’

অন্য দিকে, মঙ্গলবারই বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ কারও নাম না করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বনগাঁ পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জগদ্ধাত্রী পুজো উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন গোপাল। সেখানে বলেন, ‘‘দু'ধরনের তেল বাড়িতে থাকে। সর্ষের তেল আর পাম্প তেল। পাম্প তেল (খারাপ তেল) বাংলাদেশ থেকে আসে। সব রাজনৈতিক দলেই দু'ধরনের তেল আছে। পাম্প তেলগুলো মাথা নিচু করে রাজনৈতিক দলে ঢুকে পড়ে। তবে কেউ ধরা পড়লেই তাকে চোর বলা যায় না, যতক্ষণ না আদালতে বিচার হচ্ছে। আমরা বিরোধী বলে আমাদের পাম্প তেলের খোঁজ মিলছে। আমরা ক্ষমতায় এলে বিরোধীদের পাম্প তেলের সন্ধান পাওয়া যাবে।’’

রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারির পরে গোপালের এই মন্তব্য ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

এ বিষয়ে দেবদাস বলেন, ‘‘উনি (গোপাল) বনগাঁর পুরপ্রধান, শিক্ষিত মানুষ। তাঁর মুখে এ সব ভাষা শোভা পায় না। পুরপ্রধান নিজেই তাঁর দলের বিরুদ্ধে আঙুল তুললেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement