শিলিগুড়ি কলেজ মাঠে সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলা "উত্তরের হাওয়া" এর প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করছেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গের লিটল ম্যাগাজ়িন মেলায় ব্রাত্য থাকলেন উত্তরবঙ্গের লেখক, সহিত্যিক, কথাকার, লিটল ম্যাগাজ়িনের উদ্যোক্তাদের অনেকে। শুক্রবার শিলিগুড়ি কলেজ মাঠে ওই সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজ়িন মেলা ‘উত্তরের হাওয়া’ শুরু হয়েছে। আর জি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবির আন্দোলনে অনেকে সক্রিয় থাকার কারণেই সরকার তথা পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসবে তাঁদের বাদ রাখা হল বলে অভিযোগ।
এ দিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধক তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘কাউকে ডাকা হয়নি, এমন বিষয় জানা নেই। যারা আয়োজন করেছেন, তাঁরা বলতে পারবেন।’’ উদ্যোক্তা তথা তথ্য সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে নয়, তবে এ বছর সবাইকে ডাকা সম্ভব হয়নি।
ত দুই বছর উৎসবে ডাক পেয়েছেন এমন অনেকে অবশ্য এ বার ডাক না পেয়ে অসন্তুষ্ট। শিলিগুড়ির কবি, লেখক কৌশিক জোয়ারদার বলেন, ‘‘আমি আর জি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে পথে নেমেছিলাম। আবার এ বারই উত্তরবঙ্গ লিটল ম্যাগাজ়িন মেলায় ডাক পেলাম না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নির্যাতিতার বিচার চেয়ে আন্দোলনে যাওয়ার সঙ্গে এর যোগ রয়েছে কি না, সেটাই বোঝার চেষ্টা করছি।’’
সমাজ মাধ্যমেও অনেকে তা নিয়ে সরব হয়েছেন। কোচবিহারের কবি, লেখিকা সুপর্ণা পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রথমে ডাকা হয়নি। পরে আমাকে ডাকা হয়েছে। আমি আসছি না।’’ তিনি জানান, জলপাইগুড়িতে অনেক বন্ধুদের নিজস্ব লিটল ম্যাগাজ়িন রয়েছে। নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে তারা পথে নেমেছেন বলে ডাক পাবেন না, এটা মেনে নিতে পারিনি।কোচবিহারের একটি লিটল ম্যাগাজ়িন পত্রিকার সম্পাদক সৌভিক রায় বলেন, তাঁর স্ত্রী এবং মহিলাদের একটা বড় দল কোচবিহারে একটি সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রে মোমবাতি জ্বালিয়ে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে সরব হয়েছিলেন। সেটা সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করলে বহু লোক সমর্থন জানিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘গত দুই বছর আমার পত্রিকা এবং আমাকে আলাদা করে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল। এ বার আমি আমন্ত্রণ পাইনি। পত্রিকাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাই খারাপ লাগছে।’’
জলপাইগুড়ির জয়শীলা গুহ বাগচীর কথায়, ‘‘আমন্ত্রণ পাইনি। আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলাম। তবে জানতে পেরেছি, এমন অনেকে আছেন যাঁরা আন্দোলনে শামিল হলেও এ বার ডাক পেয়েছেন।’’ জলপাইগুড়ি থেকে কবি সাহিত্যিক বিজয় দে বলেন, ‘‘গত দু’বছর ডাক পেয়েছিলাম। এ বার পেলাম না। তাই অস্বস্তি হচ্ছে।’’ নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে তিনিও শামিল হয়েছিলেন বলে জানান।