Illegal Construction

আইনের ফাঁকে ছাড় পাচ্ছে ‘অবৈধ’ নির্মাণ

কয়েক দিন আগেই, জিটি রোডের ধারে শশাঙ্ক বিল বুজিয়ে বহুতল গড়ার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিজ্ঞান মঞ্চ আন্দোলন করে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৫৪
Share:

খোসবাগানে নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগ ১: জিটি রোডের উপরে নির্মীয়মাণ আট তলা ভবনের মধ্যে তিনটে তলা বেআইনি।

Advertisement

অভিযোগ ২: অফিসার্স কলোনি ও ইছলাবাদের রাস্তায় সরু গলির ভিতরে তৈরি হচ্ছে ছ’তলা ভবন। পুর-নিয়ম মেনে চারি দিকে কোনও ছাড় নেই। কার্যত ভিতরের রাস্তা দখল করে ‘সেপটিক ট্যাঙ্ক’ তৈরি করা হয়েছে।

অভিযোগ ৩: বাবুরবাগ, খোসবাগানের মতো এলাকায় কোনও নকশা ছাড়া তিনতলা বাড়ি হচ্ছে।

Advertisement

এ তো গেল শহর জুড়ে বেআইনি ভাবে বাড়ি বা বহুতল তৈরির অভিযোগ। এর সঙ্গে রয়েছে পুকুর বুজিয়ে নির্মাণের প্রবণতাও। আছে বাঁকা নদীর ধার দখল করে বাড়ি তৈরির অভিযোগও। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরসভার কর্মী বা পুরকর্তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতের অভিযোগও ওঠে। তবে অভিযোগ আর নির্মাণ কিছুই বন্ধ হয় না।

কয়েক দিন আগেই, জিটি রোডের ধারে শশাঙ্ক বিল বুজিয়ে বহুতল গড়ার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিজ্ঞান মঞ্চ আন্দোলন করে। পুরপ্রধান পরেশ সরকার সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজ আটকে দেন। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে নারকেলবাগান এলাকাতেও একটি পুকুর দীর্ঘ দিন ধরে বোজানো হচ্ছে বলে জেলাশাসক আয়েষা রানি এ-র কাছে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগের ভিত্তিতে বিএলএলআরও (বর্ধমান ১) ও পুরসভাকে সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলে জেলাশাসক। পুরপ্রধান জানিয়েছেন, সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। পার্কাস রোডেও জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে।

পুরসভার দাবি, জলাশায় বোজানোর ক্ষেত্রে অভিযোগ পেলে জেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে কিছু একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কিন্তু বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ এলে প্রাথমিক স্তরে আটকানো গেলেও পরে সব উধাও হয়ে যায়। বেআইনি নির্মাণ আইনি বাড়ি হয়ে যায়। সেই কারণে পুরসভায় কোনও সময়েই কত বাড়ি বেআইনি, তার হিসেব পাওয়া যায় না। পুর-কর্তাদের দাবি, বেআইনি নির্মাণ টাকা দিয়ে বৈধ করার ব্যবস্থা পুরসভার আইনেই রয়েছে। এক পুর-প্রতিনিধির দাবি, “গত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। শেষ দিন এক রাতেই একশোর উপর নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সেটাই এখন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে পুরসভাকে।” আর এক পুর-প্রতিনিধির দাবি, “করোনা বা পরবর্তী সময়ে ওই নকশায় যাঁরা নির্মাণ করতে পারেননি, পুরসভা তাঁদের নকশা পুনর্নবীকরণ করে দিয়েছে। তারও মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পুরনো তারিখে বেশ কিছু নকশার পুনর্নবীকরণ করা চলছে।

সবটা অস্বীকার করছেন না পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। এক ইঞ্জিনিয়ারের দাবি, “অফিসার্স কলোনি, ইছলাবাদের মতো অন্তত ৩০টি নির্মাণ শহরে হচ্ছে। অফিসার্স কলোনিতে গিয়ে আমরা মাপজোক করে এসেছি। প্রোমোটারকে পাঁচিল দিতে নিষেধ করা হয়েছে।” পুরপ্রধানের দাবি, “ওই সব নকশা আটকে দিলেই হাই কোর্টে গিয়ে অনুমতি নিয়ে আসছে, আমাদের কিছু করার থাকছে না।”

তবে সত্যিই আটকানোর উপায় নেই না কি সদিচ্ছার অভাবও রয়েছে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement