ভোগান্তি: হাবড়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কামারথুবা এলাকায় ঢালাই রাস্তার উপরে জল। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। বহু জায়গায় বাড়ির ভিতরে জল ঢুকে গিয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় অধিকাংশ রাস্তাই জলমগ্ন। ধান, আনাজ চাষের জমিতে জল জমে যাওয়ায় বড় ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হাবড়া পুরসভার পশ্চিম কামারথুবা পদ্মারপাড় এলাকা-সহ কয়েকটি জায়গায় জল জমে গিয়েছে। রাস্তা ও বাড়ির উঠোনে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ হাবড়ার বেশ কিছু বাড়ির উঠোনেও জল জমেছে। কংক্রিটের রাস্তাতেও জল বইছে। হাবড়ার কালীবাড়ি বাজার যাওয়ার রাস্তা ও হাবড়া স্টেশন লাগোয়া আশুতোষ কলোনি এলাকাতেও জল জমেছে। পুরসভার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শহরবাসী।
প্রতি বছরই ভারী বৃষ্টিতে হাবড়া শহরের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পাম্প চালিয়ে জল বের করা হয়। গত বছর ঘরের মধ্যে বৃষ্টির জমা জলে পড়ে গিয়ে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা উন্নতির দাবি তুলেছেন পুরবাসী। সেই দাবি অবশ্য পূরণ হয়নি। পরিস্থিতির যে উন্নতি হয়নি, তা আবারও জল জমায় প্রমাণ হয়ে গেল।
হাবড়ার পুরপ্রশাসক নারায়ণ সাহা বলেন, “পুরসভার ৫, ৭, ৮, ৯ ১১, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু এলাকায় অতিবৃষ্টিতে জল জমে গিয়েছে। রাস্তা কেটে ও পাম্প বসিয়ে জল বের করা হয়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলে দ্রুত জল বের করে দেওয়া হবে।” বনগাঁ শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
রাতভর বৃষ্টিতে জলে ভাসছে বসিরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। বসিরহাট, টাকি এবং বাদুড়িয়া পুরসভা এলাকায় বড় অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি নালা বন্ধ করে মেছোভেড়ি, দোকান, বাড়ি তৈরি হওয়ায় জল বেরোতে পারছে না। তার জেরে ভারী বৃষ্টি হলেই সমস্যা বাড়ছে।
হিঙ্গলগঞ্জ থানার নেবুখালি বাসস্ট্যান্ড চত্বর, ভেসেল ঘাটে যাওয়ার রাস্তায় জল জমেছে। ফলে গাড়ি চলাচল বিঘ্নিত হয়। সন্দেশখালি থানার দুর্গামণ্ডপ পঞ্চায়েত এলাকার দাউদপুর-সহ বিভিন্ন গ্রামে বাড়ির সামনে জল জমে যায়।
টানা বৃষ্টিতে বসিরহাট মহকুমা জুড়ে ধান ও আনাজ চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়তে পারে মাছ চাষও। বিভিন্ন এলাকায় চাষের জমি জলে ডুবে গিয়েছে। স্থানীয় চাষিরা জানান, এ ভাবে তিন-চার দিন ধান গাছ জলে ডুবে থাকলে সব নষ্ট হয়ে যাবে। কয়েকটি জায়গায় নদী বাঁধ আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রের খবর।
মিনাখাঁর বিডিও শেখ কামরুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের তরফে দ্রুত জল সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ সন্দেশখালি ১ এর বিডিও সুপ্রতিম আচার্য বলেন, “বামুনিয়া এলাকায় দুই জায়গায় নদীবাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে খবর পেয়েছি। স্থানীয় প্রধান ও সেচ দফতর নজর রেখেছে।”