উদ্যোগ: ম্যানগ্রোভ চারা পুঁতছেন মহিলা। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সুন্দরবন এলাকায় প্রচুর গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু গাছ উপড়ে গিয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবে। দ্রুত নতুন করে গাছ লাগিয়ে সেই অভাব পূরণ করতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন। একদিকে যেমন রাস্তার পাশে সোনাঝুড়ি, কৃষ্ণচূড়ার মতো গাছ লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে, তেমনই সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা বিশেষ করে নদীর চর, নদীবাঁধগুলিতে ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজও চলছে।
আয়লা, ফণী কিংবা বুলবুলের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে সুন্দরবনকে বছরের পর বছর ধরে রক্ষা করে চলেছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। তবু ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে মেছোভেড়ি তৈরি হচ্ছে, বিঘের পর বিঘে জমির গাছ কেটে দখল নেওয়া হচ্ছে। এ সবের বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে জেলা জুড়ে প্রচুর গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত সেই ক্ষতিপূরণ করার জন্য গাছ লাগানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই প্রায় পঞ্চাশ হেক্টর জমিতে ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আরও ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজ চলছে। এ বার থেকে জেলা জুড়ে সারা বছর ধরেই এই ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজ চলবে।’’ বুলবুলের প্রভাবে ম্যানগ্রোভের বনভূমির যে ক্ষতি হয়েছে, তা মেরামত করতেও উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের বুলবুল বিধ্বস্ত গোসাবা, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘি, বাসন্তী-সহ তেরোটি ব্লকে জোর কদমে শুরু হয়েছে ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজ।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে সুন্দরবনের এই সমস্ত ব্লকের মহিলাদের ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজে ব্যবহার করছে প্রশাসন। ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবারের মহিলারা কর্মসংস্থানের সুযোগও পাচ্ছেন।
নদীর পাড়ে ও গ্রামের মধ্যে নার্সারি করে মটগরান, ঝাটিগরান, গর্জন, জাতবাইন, কালবাইন, কাঁকড়া, গোলপাতা-সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দশ লক্ষ ম্যানগ্রোভের চারা তৈরি করেছেন সুন্দরবনের গ্রামের মহিলারা। এই চারাগুলি বুলবুলের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নদীর চর ও নদীবাঁধে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।