Matua

PM Modi: প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনাতে বসছে প্রচুর জায়ান্ট স্ক্রিন

মহামেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যে ঠাকুরনগর-সহ গাইঘাটা সেজে উঠেছে। চারিদিকে বড় বড় তোরণ লাগানো হয়েছে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২২ ০৭:২৪
Share:

মতুয়া মেলার প্রস্তুতি। তৈরি হয়েছে অস্থায়ী দোকানপাট। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

করোনা পরিস্থিতিতে দু’বছর বন্ধ থাকার পরে এ বার ফের হচ্ছে মতুয়া ধর্ম মহামেলা এবং পুণ্যস্নান। স্বাভাবিক ভাবেই মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে ভক্তদের আসার তাগিদ অনেকটাই বেশি।
সোমবার সকাল থেকেই ভক্তেরা দলবদ্ধ ভাবে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। ডাঙ্কা-কাঁসি-নিশান নিয়ে হরিচাঁদ- গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির প্রদক্ষিণ করছেন।

Advertisement

মহামেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যে ঠাকুরনগর-সহ গাইঘাটা সেজে উঠেছে। চারিদিকে বড় বড় তোরণ লাগানো হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের ছবি। কোথাও বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুরের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও আছে। কোথাও আবার মতুয়াদের বড়মা বীণাপানি ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর স্বামী তথা ঠাকুরবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের ছবি।

গোটা এলাকা জুড়ে অসংখ্য জলসত্র খোলা হয়েছে। ঠাকুরনগরে বাসিন্দারা বাড়ির উঠোন ভক্তদের থাকার জন্য খুলে দিয়েছেন। প্রচুর দোকানপাট বসেছে। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার ঠাকুরবাড়িতে কামনা সাগরে পুণ্যস্নানের মাধ্যমে মেলা শুরু হবে। এ বার মহামেলা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ভিডিয়ো বার্তা দেবেন। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময়ে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। তা মানুষকে সরাসরি শোনানোর জন্য ঠাকুরবাড়িতে ১৫টি জায়ান্ট স্ক্রিন বসানো হচ্ছে। এ ছাড়া, বনগাঁ, বাগদা, চাঁদপাড়া, হরিণঘাটা, কল্যাণী, চাকদহ-সহ বিভিন্ন এলাকায় জায়ান্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা থাকছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের লিঙ্ক দেশ-বিদেশে থাকা আমাদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

মতুয়া মহাসঙ্ঘ কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, এ বার মহামেলায় ৪০ লক্ষ মানুষ আসবেন। তাঁদের জন্য খিচুড়ি ও তরকারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছে যথেষ্ট শৌচালয় এবং পানীয় জলের পাউচ।
এ বার রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মতুয়া ভক্তদের আসার জন্য বিশেষ ট্রেন, এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্যবস্থা করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। বাড়ানো হয়েছে লোকাল ট্রেনের সংখ্যাও। দীর্ঘদিন পরে এ বার মমতা ঠাকুর এবং শান্তনু ঠাকুর এক সঙ্গে মেলার আয়োজন করছেন বলে ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

মমতা বলেন, ‘‘ভক্তদের যাতে ঠাকুরবাড়িতে এসে কোনও অসুবিধার মধ্যে পড়তে না হয়, সে জন্য থাকা-খাওয়া সহ সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ভিড় সামলাতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘১০০ জন অফিসার এবং ৩০০ জন পুলিশকর্মী মহামেলার নিরাপত্তায় থাকবেন। এ ছাড়া, থাকছেন সিভিক ভলান্টিয়াররা।’’ গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস জানিয়েছেন, সমিতির পক্ষ থেকে মতুয়া ভক্তদের থাকার জন্য ত্রিপল ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহামেলা উপলক্ষে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ঠাকুরনগরে থাকা চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। মহামেলার দিনগুলিতে (২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল) পর্যন্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্রুত যাতায়াতের জন্য বিশেষ রুট থাকছে। পুলিশি সহযোগিতায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই রুটে যাতায়াত করবেন।

গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘ঠাকুরবাড়িতে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র করা হয়েছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকবেন। এ ছাড়া, ৪৫টি সংগঠনকে ওষুধপত্র দেওয়া হয়েছে।’’ লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে যাতে করোনা ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্যও পদক্ষেপ করা হয়েছে। সুজন বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার বিলি করা হবে। র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা থাকছে। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই করোনা পরীক্ষা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement