বাগদা বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুরের সমর্থনে বাগদার নাটাবেড়িয়ায় জনসভায় ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র।
সিএএ-কে (নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন) ‘মোয়া, লাড্ডু’ বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বাগদা বিধানসভার উপ নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুরের সমর্থনে বাগদার নাটাবেড়িয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় সভা করেন ফিরহাদ। সেখানে বলেন, ‘‘সিএএ মানে কী? মোয়া-লাড্ডু, যে খেয়ে নেবেন? আমরা যাঁরা ভারতবর্ষে বসবাস করি, সকলেই নাগরিক। আমরা যাঁরা ভারতবর্ষে থাকি, আমাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড আছে। সেগুলো কি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়?’’
লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্র নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের (সিএএ) বিধি কার্যকর করেছিল। লোকসভা ভোট চলাকালীন কিছু মানুষকে নাগরিকত্বের শংসাপত্রও দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়া জেলার কয়েক জন মতুয়া উদ্বাস্তু সমাজের মানুষও ছিলেন। রাজ্যে বিজেপির ফল খারাপ হলেও মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ এবং রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি জয়লাভ করেছিল। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র আছে, তার মধ্যে বাগদায় সব থেকে বেশি মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষ বসবাস করেন।৷ রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে লোকসভা ভোটে এখানে নাগরিকত্বের বিষয় প্রভাব ফেলেছিল।
ফিরহাদ এ দিন আরও বলেন, ‘‘বলছে, আপনার ঠাকুরদা কোথা থেকে এসেছিল, তার প্রমাণ দিতে। আরে, ঠাকুরদা যখন এসেছিলেন, তখন বাংলাদেশ তৈরিই হয়নি।।’’
মন্ত্রীর কটাক্ষের জবাবে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল পরে বলেন, ‘‘তৃণমূল চায় না, মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষ এ দেশের নাগরিকত্ব পান, অধিকার নিয়ে বাঁচেন। কেন্দ্র মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষকে নাগরিকত্ব দেবে। তা মতুয়ারা জানেন।’’
এ দিনই বাগদা বিধানসভার উপ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বিনয় বিশ্বাসের সমর্থনে বাগদার সিন্দ্রাণীতে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মিছিল হয় বিজেপির। শুভেন্দু, বিনয় ছাড়াও মিছিলে ছিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল, দলের বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, অশোক কীর্তনিয়া, অসীম সরকারেরা।
মিছিল শেষে শুভেন্দু সিন্দ্রাণী বাজার এলাকায় পথসভা করেন। ছোট মঞ্চ করা হয়েছিল। শুভেন্দুর বাগদায় প্রচার কর্মসূচিতে আসা নিয়ে শুক্রবার বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্ব চেয়েছিলেন, শুভেন্দু পাথুরিয়া এলাকায় জনসভা করুন। সেই মতো মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু ওই সভা করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন।
শুভেন্দু এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ-প্রশাসন আটকেছে। বিজেপিকে ভয় পেয়েছে। এত কিছু করেও আমাকে আটকাতে পারল কি! এই তো বাগদার মাটিতে এসেছি।’’
শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী পরে বলেন, ‘‘বিজেপি মানেই অ-কথা, কু-কথার ফুলঝুরি। শুভেন্দু অধিকারী এত বড় নেতা নন যে ওঁর কথার উত্তর দিতে হবে।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে লোকসভা ভোটের ফলাফল দেখে। উদভ্রান্তের মতো কথা বলছেন।’’