বাসন্তীর অস্ত্র কারখানা থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
জয়নগরে পর এ বার বাসন্তী। ফের বেআইনি অস্ত্র কারখানার সন্ধান মিলল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
রবিবার রাতে বাসন্তীর তিতকুমার বটতলা এলাকায় ওই অস্ত্র কারখানায় হানা দিয়ে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ তিনটি ওয়ান শটার পাইপগান ও একটি লং ব্যারেল বন্দুক উদ্ধার করেছে। অভিযানে ছিল বাসন্তী থানার পুলিশও। একই সঙ্গে ওই কারখানা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ড্রিল মেশিন, ওয়েল্ডিং মেশিন, কাটিং মেশিন ও কাটা লোহার পাইপ। ওই বেআইনি অস্ত্র কারখানা চালানোর অভিযোগে বাবা-ছেলে সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ধৃতদের নাম ইশতাহার গাইন, হাসানুর গাইন এবং মহম্মদ রিয়াজ খান। ইশতাহারের ছেলে হাসানুর। যে বাড়িতে ওই অস্ত্র কারখানা চলত, তার মালিক ইশতাহার। তার নির্দেশেই ওই কারখানা চলত। সে অস্ত্রের ডিলার ছিল বলেই তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
এসডিপিও (ক্যানিং) দিবাকর দাস বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এরা অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছে। তবে আরও কারা এই কারবারে জড়িত, কোথায় কোথায় অস্ত্র কেনাবেচা হত সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
গত মাসে জেলা পুলিশ জয়নগরে হদিস পেয়েছিল একটি অস্ত্র কারখানার। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই কারখানার মালিককে। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছিল প্রচুর অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামও। বাসন্তীতেও প্রায় একই ঘটনা।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গ্রিল কারখানার আড়ালে বাসন্তীর ওই কারখানা চলছিল। ওই কারখানা থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্র সরবরাহ করা হত। তবে কতদিন ধরে ওই কারখানা চলছে তা নিয়ে গোয়েন্দারা কিছু বলতে না পারলেও তাঁদের অনুমান, পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই ওই অস্ত্র কারখানা চলছিল। নির্জন এলাকার সুযোগ নিয়ে ঘরের ভিতর ওই অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম আর যন্ত্রপাতি দিয়ে দেশি ওয়ান শটার, লং ব্যারল বন্দুক তৈরি করছিল বাবা ও ছেলে। ধৃতদের সোমবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের চার দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই ঘটনায় অবাক হয়েছেন স্থানীয়রা। এলাকার বাসিন্দা নূর ইসলাম গাইন বলেন, “খোলা চোখে এদের (ইশতাহার ও তার ছেলে) তো একটি সাধারণ চাষি পরিবার বলেই মনে হয়। এই ধরনের অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত আছে, আগে ঘুণাক্ষরেও বুঝিনি।”