ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য প্রকল্পের ভবন। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।
মৎস্য দফতরের অধীনস্থ রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য প্রকল্পের পুকুর থেকে মাছ চুরির অভিযোগ উঠল সেখানকারই তিন কর্মীর বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই মাছ চুরি হচ্ছিল। গত ৩০ নভেম্বর রাতে ফের চুরি হওয়ায় প্রকল্প আধিকারিক অভিষেক পাত্র নিজেই তদন্ত করেন। তারপরে দুই স্থায়ী কর্মী এবং এক অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তিন জনই আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই স্থায়ী কর্মীকে অন্য জেলায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত অস্থায়ী কর্মীকেও কাজে আসতে বারণ করা হয়েছে বলে নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে।
মৎস্য প্রকল্প আধিকারিক অভিষেক পাত্র বলেন, “চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তদন্তে জানা যায়, অফিসের তিন কর্মী যুক্ত। থানায় অভিযোগ জানানো হয়। বিষয়টি এখন বিচারাধীন রয়েছে।”
নিগমের অধীনে ১৯৬৭ সালে ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য প্রকল্পটি তৈরি হয়। প্রায় ৯০ হেক্টর জমিতে নোনা, মিষ্টি এবং মিশ্র জলে বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছ উৎপাদন করা হয়। এখানে ৩০ জন স্থায়ী ও ২৭ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। স্থানীয় মৎস্যজীবীরা এখান থেকে অল্প টাকায় মাছ কিনে বাইরে বিক্রি করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মাছ চুরির জেরে প্রকল্পের আয় কমে গিয়েছিল। অস্থায়ী কর্মীরা ঠিক মতো বেতন পাচ্ছিলেন না বলেও অভিযোগ। কর্তৃপক্ষের তরফে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশই মাছ চুরির সঙ্গে যুক্ত। পরে অবশ্য তদন্তে প্রকল্পের কর্মীদের নামই সামনে আসে।
অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয়েরা। মৎস্য প্রকল্পের অফিসে স্মারকলিপিও দিয়েছেন স্থানীয়দের একাংশ। স্থানীয় বাসিন্দা দিব্যেন্দু মণ্ডল বলেন, “প্রকল্প আধিকারিক নিজেই তিন কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মাছ চুরির অভিযোগ করেন। অভিযুক্তেরা দীর্ঘদিন এই চুরির সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা যেন শাস্তি পায়, তার দাবি আমরা করেছি। না হলে আন্দোলনে নামব।”
স্থানীয় বিজেপি নেতা অনুপ সমান্ত বলেন, “তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছিল। কিন্তু তারা গ্রেফতার না হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন নিশ্চুপ।” নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাস বলেন, “চুরি বা দুর্নীতি যেই করুক, প্রমাণিত হলে শাস্তি পেতেই হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।”