প্রতীকী ছবি
লকডাউনের শুরু থেকেই ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের আকাল শুরু হয়েছিল। পুলিশ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রক্তদান শিবির করে রক্ত সংগ্রহ করে কিছুটা হলেও সমস্যা মেটায়। কিন্তু পুজোর মরসুমে ফের রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে।
গত কয়েক দিন ধরেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের জন্য কার্যত হাহাকার চলছে। একের পর এক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীরা আসছেন। কিন্তু রক্ত না পেয়ে সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। কেউ কেউ একই গ্রুপের রক্তদাতা নিয়ে এসে তার বিনিময়ে রক্ত পাচ্ছেন। কেউ সারা দিন ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে বসে থেকেও পাচ্ছেন না রক্ত। ক্যানিংয়ের বাসিন্দা স্বপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমার বারো বছরের মেয়ে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। প্রতি মাসে দু’বার রক্তের প্রয়োজন হয়। আজও রক্তের জন্য গিয়ে ফিরে এসেছি। রক্তদাতা জোগাড় করে না নিয়ে গেলে রক্ত মিলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে।”
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের এক চিকিৎসক বলেন, “আমাদের কিছুই করার নেই। গত মার্চ মাস থেকে ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের অভাব চলছে। এখন সামান্য কিছু পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত আছে। কিন্তু হাসপাতালের জরুরি চিকিৎসার জন্য তা রাখতে হয়।”
ব্লাড ব্যাঙ্কের এক কর্মী জানান, প্রতিদিন গড়ে পনেরো ইউনিট রক্তের চাহিদা থাকে। মাসে প্রায় পাঁচশো ইউনিট। প্রতি বছর পুজোর সময়ে রক্তের চাহিদা বাড়ে। এ বছর এই চাহিদা কী ভাবে জোগান দেওয়া যাবে, তা ভেবেই শঙ্কিত ক্যানিং মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি করে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিয়ম করে রক্তদানের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। রক্তের এই সঙ্কটের কথা জেনে ক্যানিংয়ের মিঠাখালি সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি বুধবার পঞ্চমীর দিন সকালে মণ্ডপের সামনেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। ৭২ জন শিবিরে রক্তদান করেন। অন্যতম উদ্যোক্তা উত্তম দাস, পরেশ দাসরা বলেন, “এর আগেও ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের অভাবের কথা শুনে আমরা একাধিক শিবির করেছি, হাসপাতালে গিয়েও রক্ত দিয়েছি।” পুজো কমিটির এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ক্যানিং ১ বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে। তিনি বলেন, “যে ভাবে পরেশবাবু ও উত্তমবাবুরা পুজো প্রাঙ্গণেই রক্তদান শিবির করলেন, সেটা প্রশংসনীয়। এই রক্ত সঙ্কটের সময়ে অন্যান্য পুজো কমিটিগুলোও এ ভাবে এগিয়ে এলে, সমস্যা অনেকটা কাটিয়ে ওঠা যাবে।”