ভোগান্তি: এখনও হল না ডাবল লাইন। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বনগাঁ-রানাঘাট শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার আগে। কিন্তু এত দিনেও তৈরি হল না ডাবল লাইন। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। যাত্রী-স্বাচ্ছন্দের দিকেও রেল কর্তৃপক্ষের নজর নেই বলে অভিযোগ।
এই শাখায় নিত্যযাত্রীদের প্রধান দাবি, ডাবল লাইন। দীর্ঘদিন ধরে রানাঘাট-বনগাঁ রেলযাত্রী সুরক্ষা সমিতি এ নিয়ে সরব। রেলমন্ত্রী, রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান, ডিআরএম, সাংসদ-সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠিপত্র দিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
শনিবার বিকেলে ডাবল লাইন-সহ বেশ কিছু দাবিতে বনগাঁ স্টেশনে পথসভা করা হয়। দাবি না মেটা পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে বলে জানান সমিতির কর্মকর্তারা।
বনগাঁ-রানাঘাট শাখার দূরত্ব প্রায় ৩৩ কিলোমিটার। স্টেশন রয়েছে ৭টি। দৈনিক প্রায় ৫০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। রেলপথে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মানুষের নদিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম এই রেলপথ। যাত্রিবাহী ট্রেন ছাড়াও এই পথে চলে পণ্যবাহী ট্রেন। যাত্রীদের অভিযোগ, সিঙ্গল লাইনে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন এক সঙ্গে চলাচল করার ফলে মালবাহী ট্রেনকে জায়গা দিতে যাত্রীবাহী ট্রেনকে অনেক সময়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। কখনও কখনও ঘণ্টাখানেকও দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
সমিতির সম্পাদক শিশির ঘোষ বলেন, “রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা ডাবল লাইন চালু করার দাবি করেছি। যতদিন তা না হচ্ছে, ততদিন মাঝেরগ্রাম ও গোপালনগর স্টেশনে দু’টি ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা করা হোক। তা হলে অন্তত হয়রানি কিছুটা কমবে। রানাঘাট স্টেশনে ঢোকার আগে বাঁ দিকে ব্রিটিশ আমলে একটি বাইপাস লাইন ছিল। যা দিয়ে মালবাহী ট্রেন চলত। সেটাও দীর্ঘদিন বন্ধ। ওটা চালু হলে বনগাঁ-কল্যাণী যাত্রিবাহী ট্রেন চালু করতে সুবিধা হবে।” সমিতি সূত্রের খবর, ডাবল লাইনের জন্য রেল সমীক্ষা করেছে। তারপরেও কাজ এগোয়নি। এ ছাড়াও কিছু সমস্যা রয়েছে এই শাখায়। সমিতি সূত্রের খবর, বনগাঁ ও রানাঘাট স্টেশন ছাড়া বাকি স্টেশনগুলি থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না। অন্তত আরও দু’টি স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিট কাউন্টার খোলার দাবি জানানো হয়েছে। রাত ৯টার পরে ট্রেন চলে প্রায় দু’ঘণ্টা অন্তর। যাত্রীদের দাবি, রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে আরও একজোড়া ট্রেন চালাতে হবে। রানাঘাট স্টেশনে ২, ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কোনও শৌচালয় নেই। ফলে সমস্যায় পড়তে হয়। আরও শৌচালয় বানানোর দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, বনগাঁয় আরও একটি টিকিট কাউন্টার ও সকালে একটি কৃষক স্পেশাল ট্রেন চালুর দাবি উঠেছে।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।