শারীরিক দূরত্ব বজায় নেই। ফ্রেজারগঞ্জের একটি ত্রাণ শিবিরে। ছবি: দিলীপ নস্কর
বিপজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনাটাই সুন্দরবনে প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। আয়লার পরে উপকূলবর্তী এলাকায় ১৯টি বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা হয়েছিল। করোনা-আবহে তার মধ্যে ১০টিকে প্রশাসন নিভৃতবাস হিসেবে ব্যবহার করছে। এ দিকে, শিবিরেও দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। সেই জন্য বিভিন্ন এলাকার স্কুলগুলিকে শিবির হিসেবে ব্যবহার করছে প্রশাসন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় বাসিন্দাদের শিবিরে আনার কাজ চলে।
বুলবুলের থেকেও আমপান অনেক বেশি ভয়ঙ্কর বলে ঘোষণা করেছে হাওয়া অফিস। গোসাবা, সাগর, মৌসুনি, ঘোড়ামারা-সহ বিভিন্ন দ্বীপ নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে গোসাবা, নামখানা, বাসন্তী, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, বকখালি এলাকারও।
ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসকের দফতরে কন্ট্রোল রুম খুলে বাসন্তী, গোসবা, ক্যানিং এলাকায় নজরদারি চলছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার নদী তীরবর্তী মানুষজনকে বহুমুখী বিপর্যয় কেন্দ্রে কোথাও বা স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহকুমায় প্রায় ১৮০টি স্কুল বাড়িকেও শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুকনো খাবার, জলের পাউচ যথেষ্ট পরিমাণে মজুত রাখা হয়েছে। এর সাথে প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রে মাস্ক, স্যানিটাইজার মজুত রাখা হয়েছে। দুর্বল নদীবাঁধ জরুরি ভিত্তিতে মেরামতির কাজ চলছে।
আমপানে নদী-বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে যাতে দ্রুত মেরামত করা যায়, সে জন্য সব ব্লকে সেচ দফতরের বিশেষ দল তৈরি রাখা হয়েছে। ঝড়ের পরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় সামাল দিতে দ্বীপ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ও ট্রান্সফর্মার মজুত রাখা হয়েছে। টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হবে ধরে নিয়েই কাকদ্বীপে হ্যাম রেডিয়োর স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের অপারেটরেরা বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী রেডিয়ো স্টেশন তৈরির প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। ইতিমধ্যে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পানীয় জল, শুকনো খাবার মজুত করা হয়েছে।’’