ঘোজাডাঙা পার্কিংয়ে গমবোঝাই লরি দাঁড়িয়ে। ছবি: নির্মল বসু
গণবণ্টনের গম পাচার হচ্ছে, এই সন্দেহে শুক্রবার ১৭৫টি ট্রাক আটক করা হল উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙা সীমান্তে। ট্রাকে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকার গম আছে বলে জানাচ্ছে শুল্ক দফতর। গমের বস্তার উপরে এফসিআইয়ের (ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া) ছাপ দেখে সন্দেহ হয় দফতরের কর্তাদের। শুল্ক দফতরের ডেপুটি কমিশনার প্রশান্ত গিরি বসিরহাট থানায় এফআইআর করেছেন। আদালতের নির্দেশে জেলাশাসকের পক্ষে পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতে, পঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে চোরাই গমই বাংলাদেশে যাচ্ছিল। ২০টি ট্রাক চলেও যায়। বাকিগুলকে আটকানো হয়েছে। বিষয়টি আদালতের নির্দেশে জেলাশাসক দেখছেন। আপাতত খাদ্য দফতরের গোডাউনে ট্রাকগুলি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, কোনও কারচুপি করা হয়নি।
২৩ অক্টোবর বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে রফতানির জন্য গমের বস্তা-বোঝাই বেশ কিছু ট্রাক আসে। সীমান্ত শুল্ক দফতর সূত্রের দাবি, পরীক্ষার সময়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি বস্তায় বিভিন্ন রাজ্যের খাদ্য দফতরের ছাপ, প্রতীক রয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় গাড়িগুলি আটক করে থানায় খবর দেওয়া হয়।
পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে কলকাতা, বনগাঁ, হাবড়া-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী প্রায় ৫ হাজার টন গম রফতানির জন্য ঘোজাডাঙায় পাঠান। বস্তার গায়ে পঞ্জাব, হরিয়ানা, বিহারের ‘এফসিআই মার্ক’ (খাদ্য দফতরের বিশেষ ছাপ) দেওয়া। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গম কেনার প্রয়োজনীয় নথি চাওয়া হয়। ব্যবসায়ীরা যাঁদের কাছ থেকে গম কিনেছিলেন বলে জানাচ্ছেন, তাঁদেরও নথিপত্র-সহ দেখা করতে বলা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের পক্ষে পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রসিদ-সহ ব্যাঙ্কের মাধ্যমে গম কিনে তা রফতানি করা হচ্ছিল। শুল্ক দফতর হঠাৎ ট্রাক আটকাল।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, বস্তার গায়ে ‘এফসিআই’ লেখা থাকলেই ভিতরের মালপত্র গণবন্টনের হবে, তার কোনও মানে নেই। গণবন্টনের চাল, গম খালি হলে সেই বস্তা বাজারে বিক্রি হয়। যাদের কাছ থেকে গম কেনা হয়েছে, তারা বাজার থেকে ওই বস্তা কিনে তাতে গম ভরেছে। পুলিশকে তাঁরা নথিপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।