আটকে রয়েছেন এঁরা।
কাজের জন্য নিউ মুম্বই এসেছিলাম। কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন সব বন্ধ। কাজ নেই, জমানো পয়সাও প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। রমজান মাসে রোজা করছি ঠিকই কিন্তু ইফতার বা সেরাবি করতে হচ্ছে জল খেয়ে। এই পরিস্থিতিতে নিউ মুম্বইয়ের পানমেল থানার তানজা গাঁও এলাকায় ক্যানিং, বাসন্তী এলাকার প্রায় পাঁচশো মানুষ আটকে রয়েছি। এখানে থাকলে না খেতে পেয়ে আমরা সকলেই মারা যাব। তাই যে কোনও প্রকারে আমরা বাড়ি ফিরতে চাই।
বছর তিনেক আগে এক প্রতিবেশীর সাথে কাজের খোঁজে সস্ত্রীক বাসন্তী থানার ঢুরি গ্রাম থেকে মুম্বই এসেছিলাম। সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। সারা মাস কাজ করে সংসার খরচ চালিয়েও কিছু টাকা হাতে থাকত। বছর খানেক বাদে বাড়ি গিয়ে তিন ভাইপো ও তাদের পরিবারকেও এখানে কাজের জন্য নিয়ে আসি। বর্তমানে ক্যানিং, বাসন্তী এলাকার প্রায় শ’পাঁচেক মানুষ এখানে রয়েছেন। পুরুষরা দিন মজুরি, রাজমিস্ত্রির লেবার, হোটেল বা রেস্তরাঁয় কাজ করেন। আর মহিলারা বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার সময় থেকে সব কিছুই বন্ধ এখানে। কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে ঘুরে আসায় হাতে টাকাপয়সাও বিশেষ কিছু ছিল না। যা রয়েছে তা দিয়েই এই দিন কয়েক কোনও মতে চলেছে। এখন টাকা পয়সাও ফুরিয়েছে। রমজান মাস শুরু হয়েছে, রোজা রাখতে পারছি না অনেকেই। স্থানীয় ভাবেও কোনও সাহায্য পাইনি আমরা। এই এলাকায় আমরা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকি। ভাড়ার জন্যও বাড়ির মালিক চাপাচাপি শুরু করেছে। এই অবস্থায় যে কোনও উপায়ে আমরা বাড়ি ফিরতে চাই। শুনেছি ট্রেনে করে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা সমস্ত ফর্ম ভরেছি, মেডিক্যাল পরীক্ষাও করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমদের বাড়িতে ফেরানোর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ফলে খুব কষ্টে আছি আমরা।