টিকার লাইনে ভিড় বনগাঁর গাঁড়াপোতা পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র
বড়সড় গোলমালের আশঙ্কায় সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল টিকাকরণ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে চাঁদপাড়া ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গাইঘাটা ব্লকের ৩০০ জনকে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছিল। তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু তিনশোজনের বাইরে আরও কয়েকশো মানুষ ভোর থেকে হাসপাতালে জড়ো হন। তাঁদের জানানো হয়, এ দিন তাঁদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। যে ৩০০ জনকে ডাকা হয়েছে, তাঁদেরই শুধু দেওয়া হবে। এরপরেই হিসেবের বাইরে এসে পড়া লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁদের দাবি, ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কেন টিকা মিলবে না।
উত্তেজনা ছড়ায়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গাইঘাটা থানার পুলিশ আসে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এ দিনের টিকাকরণ কর্মসূচি বাতিল করে দেন। তবে সকালের দিকে কয়েকজনকে টিকা দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন যাঁদের ডাকা হয়েছিল, তাঁরা ছাড়াও আরও প্রায় ৩০০ জন চলে এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের পরিবারের লোকজন। এঁদের সকলকে টোকেন দেওয়া হয়েছে। গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘শুক্রবার ৩২০ জনকে এবং শনিবার ২৮৩ জন টিকা দেওয়া হবে।’’
অন্য দিকে, বনগাঁ ব্লকের গাঁড়াপোতা পঞ্চায়েত অফিসে এ দিন টিকাকরণ নিয়ে গোলমাল বাধে। অভিযোগ, সরকারি পোর্টাল কো-উইনে ভ্যাকসিনের জন্য নাম রেজিষ্ট্রেশন করেছিলেন অনেকে। সেই মতো তাঁদের বৃহস্পতিবার গাঁড়াপোতা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে পোর্টালে জানানো হয়। তাঁরা এ দিন পঞ্চায়েত অফিসে ভ্যাকসিন নিতে এলে তাঁদের জানানো হয়, টিকা মিলবে না। অভিযোগ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, তাঁদের ভ্যাকসিন দিতে হবে এমন কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। এরপরেই সকলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পাশাপাশি ভোর থেকে অনেক মানুষ ভ্যাকসিনের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর পরে জানতে পারেন, এ দিন মাত্র তিনশো মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। বাকিরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সকালে গাঁড়াপোতা হাইস্কুল থেকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা থাকলেও গোলমালের আশঙ্কায় তা পঞ্চায়েত অফিসে সরিয়ে আনা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
পঞ্চায়েত ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন ৩০০ ভ্যাকসিনের মধ্যে মূলত দ্বিতীয় ডোজ এবং সুপার স্প্রেডার গ্রুপের কিছু প্রথম ডোজ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মানুষ চলে এসেছিলেন অনেক বেশি। কো-উইন পোর্টালে রেজিষ্ট্রেশন করা মানুষজনের প্রশ্ন, সরকারি পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেও কেন ভ্যাকসিন পাবেন না। পরে বনগাঁর বিডিও অর্ঘ্য দত্ত এবং বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় ঘটনাস্থলে গিয়ে কো-উইন পোর্টালে আবেদনকারীদের টিকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। মৃগাঙ্ক বলেন, ‘‘এ দিন পোর্টালে আবেদনকারীদের হিসাব পঞ্চায়েতের কাছে ছিল না। পরে আমরা ৭৬টি ভ্যাকসিন বরাদ্দ করে তাঁদের দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’’