প্রতীকী ছবি।
বনগাঁ ব্লক ও গাইঘাটা ব্লকে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা গত এক মাসের তুলনায় কম। কিন্তু এ বার বাগদা ব্লকে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। একই পরিস্থিতি বনগাঁ পুরসভা এলাকাতেও।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত মহকুমায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪,১২৮ জন। মোট অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৩০৬ জন। ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩,৭৫১ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৪০৭ জন। বারো দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩৭৭ জন। তবে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১০১ জন।
তবে মহকুমার মধ্যে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বাগদা ব্লকের পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত ব্লকে বাগদায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭০০ জন। রবিবার একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১০২ জন। মারা গিয়েছেন ৫ জন। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একমাস আগেও এখানে দৈনিক গড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫-৭ জন। এখন দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছেন ১০-১৫ জন। একমাস আগেও অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল গড়ে ৬০-৭০ জন। এখন সংখ্যাটা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা মনে করছেন, গণপরিবহণ শুরু হয়েছে। যানবাহনে একাংশের মানুষ মাস্ক না পরে এবং গাদাগাদি করে যাতায়াত করছেন। ব্লকের হাটবাজারগুলির পরিস্থিতি ভয়াবহ। কোনও রকম স্বাস্থ্যবিধি সেখানে মানা হয় না। মাস্কের ব্যবহার কার্যত নেই। বাজারে ভিড় উপচে পড়ছে। এ সব কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। বাগদা ব্লকের বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। আক্রান্ত রোগীর পরিবারের লোকজন অবাধে বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। তাঁদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ব্লকের কোনও বাসিন্দার লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ার তিন চারদিন পর তিনি বনগাঁয় গিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করাচ্ছেন। তাতে নেগেটিভ রিপোর্ট এলে সেই রিপোর্ট দেখিয়ে তিনি এলাকায় ঘোরাঘুরি করছেন।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মানুষকে সচেতন করতে রোজ স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে দু'টি প্রচারের গাড়ি বের করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করেও মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
প্রতি বছর বাগদা ব্লকে বড় মাপের কালীপুজোর আয়োজন করা হয়। এ বারও ছোট বড় মিলিয়ে কিছু কালী পুজো হচ্ছে। এলাকার মানুষ সন্ধ্যার পর প্রতিমা দেখতে বেরোচ্ছেন। রবিবার রাতে বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ছাড়া প্রতিমা দেখতে বেরিয়েছেন। মদ্যপ অবস্থাতেও দেখা গেল অনেককে। কেন মাস্ক পরেননি। কয়েকজন মহিলা বললেন, "ভিড় তো এ বার নেই। ফাঁকা ফাঁকাই প্রতিমা দেখছি। তাই মাস্ক পরা হয়নি।’’
বনগাঁ ব্লকে রবিবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯৯৬ জন। রবিবার আক্রান্ত হয়েছেন ১ জন। অ্যাক্টিভ রোগী মাত্র ৪৩ জন। একমাস আগেও অ্যাক্টিভ রোগী ছিল গড়ে ৭০-৭৫ জন। রোজ গড়ে পজিটিভ হতেন ১৬-১৬ জন। এখন হচ্ছেন ৬ জনের মতো। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে বেশি করে পরীক্ষা করানোর ফলে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।’’ গাইঘাটা ব্লকে রবিবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১২৫৯ জন। অ্যাক্টিভ রোগী ৭৮ জন। গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘একমাস আগেও গড়ে অ্যাক্টিভ রোগী থাকত ১৩০ জনের মতো। শনিবার ১০০ জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে। সকলেই নেগেটিভ। এলাকায় ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরি হয়েছে বলেই আক্রান্তের সংখ্যা কমছে বলে মনে হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ পুরসভা এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১,১৭৩ জন। অ্যাক্টিভ রোগী ৮৩ জন। শহরের অনেক মানুষই এখন মাস্ক ছাড়া বাজারহাটে , পথে বের হচ্ছেন।