এখানেই আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। ভিড় করছেন মানুষ। ছবি: সামসুল হুদা
ক্যানিংয়ের আইসোলেশন সেন্টারের গেটের সামনেই বসছে আনাজের বাজার। প্রতিদিন সকালে সেই বাজারে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। আইসোলেশন ওয়ার্ডের বাইরে রোজকার এই জমায়েত থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্যানিং স্টেডিয়ামে তৈরি করা হয়েছে ৫৬ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার। ভেন্টিলেশন-সহ ৬ শয্যার সিসিইউ-ও তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে ক্যানিং স্টেডিয়ামের ওই আইসোলেশন সেন্টারটি কোভিড ১৯ হাসপাতলে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।
মূলত করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, বা জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ রয়েছে, এমন রোগীদেরই আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। ক্যানিংয়ের ওই আইসোলেশন সেন্টারে এখনও বেশ কয়েকজন এরকম রোগী রয়েছেন। এমন একটি আইসোলেশন সেন্টারের সামনে নিত্য বাজার বসায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই সময় বাইরে থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক আসতে শুরু করেছেন। তাঁদের অনেককেই সেখানে রাখা হচ্ছে। শুধু তাই নয় স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি ওই আইসোলেশন সেন্টারে কর্মরত স্বাস্থ্য ও প্রশাসনের কর্মীরা নিয়মিত বাজার করছেন স্টেডিয়ামের সামনের অস্থায়ী বাজারে। স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীদাম মণ্ডল বলেন, যেভাবে দিনের পর দিন চারিদিকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে করে আমরা চিন্তিত। তার উপর ক্যানিং বাজার থেকে আনাজের দোকানগুলি সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে ক্যানিং স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায়। যেখান থেকে সাধারণ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হতে পারেন। অবিলম্বে প্রশাসনের উচিত ওই এলাকার থেকে বাজারগুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
এমনিতেই ক্যানিং স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা এবং বাজারগুলি অত্যন্ত ঘিঞ্জি। বাজারগুলিতে উপচে পড়ছিল ভিড়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ক্যানিং বাজার থেকে স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আনাজের বাজার। স্টেডিয়ামে ঢোকা এবং বেরোনোর আলাদা দুটি পথ রয়েছে। শুধু তাই নয়, স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে মহকুমা শাসকের দফতর, ব্লক প্রশাসনের দফতর, সুইমিং পুল, পথের সাথী-সহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিস এবং দোকান-বাজার। কাছেই কর্মতীর্থ কেন্দ্রে আবার রাখা হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের।
এক আনাজ বিক্রেতা বলেন, "প্রশাসন আমাদের ক্যানিং বাজার থেকে এই এলাকায় সরিয়ে নিয়ে এসেছে। সেইমতো এখানে আমরা পসরা সাজিয়ে বসেছি। যদি প্রশাসন আমাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে তাহলে আমরা সেখানে চলে যেতে পারি। ক্যানিং বাজার কমিটির সম্পাদক হরিনারায়ণ খাঁড়া বলেন, আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে যদি আমাদের অন্যত্র বসার ব্যবস্থা করে তাহলে আমরা সেখানে যেতে পারি।" ক্যানিং ১ ব্লকের বিডিও নীলাদ্রিশেখর দে বলেন,"ক্যানিং স্টেডিয়ামে আইসোলেশন সেন্টার করার আগে ভিড় এড়াতে বাজার ফাঁকা জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমরা চেষ্টা করছি ওই জায়গা থেকে বাজার অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার। জায়গা খোঁজা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত কিছু একটা ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।"