ছবি: পিটিআই।
আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে দুই ২৪ পরগনায়। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হলেন তিন জন। এর মধ্যে দু’জনের কলকাতা যোগ রয়েছে। তৃতীয় আক্রান্ত পূর্ব মেদিনীপুর গিয়েছিলেন। তিনটি এলাকাকে নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সংক্রমণের-ভ্রুকুটি সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের অকারণ ঘোরাঘুরিতে রাশ টানা যাচ্ছে না। নতুন করে দু’জন আক্রান্ত হওয়ায় বসিরহাটে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল সাত। নতুন আক্রান্তকে নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট ২ ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়। ইতিমধ্যে এই ব্লকে মৃত্যু হয়েছে এক আক্রান্তের।
রবিবার রাতে মগরাহাট-২ ব্লকের অর্জুনপুর সাহাপাড়ার বছর বত্রিশের এক যুবকের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ব্যাবসায়ী ওই যুবক নিয়মিত কলকাতা থেকে মুদিখানার জিনিসপত্র আনতেন। দিন কয়েক আগে জ্বর-সর্দি নিয়ে মগরাহাট গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে পরিবারের লোকেরা তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। মগরাহাট ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ গওসুল আলম বলেন, “রবিবার রাতে ওই যুবকের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে শুনেছি। ওই যুবকের বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে-সহ ২০ জনকে গৃহ নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের লালা রস সংগ্রহ করার কাজ শুরু হয়েছে।” মগরাহাট-২ পঞ্চায়েতের সহ-সভাপতি সেলিম লস্কর জানান, ওই এলাকা 'সিল' করে দেওয়া হয়েছে।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে দুই আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। হাসনাবাদ থানার বিশপুর পঞ্চায়েত এলাকার ওই যুবক ১ মার্চ ই-কমার্স সংস্থার কাজে পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে ১২মে সরকারি উদ্যোগে বাসে করে বাড়িতে ফেরেন। বারাসতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছিল। ১৩ মে সকালে টাকি হাসপাতালে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অভিযোগ, তাঁকে গৃহ নিভৃতবাসে থাকতে বলা হলেও তিনি বাইরে ঘুরেছেন। রবিবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরে মাঝ রাতে ওই যুবককে বাড়ি থেকে বারাসতের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হিঙ্গলগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক দাঁ বলেন, “আক্রান্ত যুবকের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন সাত জন। পরোক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন আরও ছ’জন। আরও কেউ তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন কিনা, তার খোঁজ চলছে।” এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে গ্রামের দুটি বাজার।
দ্বিতীয় আক্রান্ত হাসনাবাদের ভেবিয়া এলাকার বাসিন্দা। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, ভেবিয়ার ওই ব্যক্তি কলকাতায় দমকল বিভাগে কাজ করতেন। রবিবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তাঁকেও কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর পাড়াকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এলাকার থেকে দোকান-বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলকে চিহ্নিত করে গৃহ নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে।