ছ’বছর নিখোঁজ থাকার পর ডায়মন্ড হারবারের শিশুর সন্ধান মিলল হাওড়ায়। — নিজস্ব ছবি।
২০১৬-য় হাসপাতাল চত্বর থেকে চুরি গিয়েছিল একটি শিশু। ছ’বছর বাদে পুলিশ তারই খোঁজ এনে দিল মায়ের কাছে। এই ঘটনা ঘিরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগর থানার শিমলা গ্রামে উৎসবের আমেজ। ঘটনায় এক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার টানা অভিযান চালিয়ে হাওড়ার সাঁকরাইল থানা এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটিকে আপাতত একটি সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শিমলা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দা আসমুদা বেগম ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর তাঁর আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসেন। দুপুরে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে ছিলেন তাঁরা। সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় এক মহিলার কাছে নিজের ছেলেকে কিছু ক্ষণের জন্য রেখে বাইরে যান আসমুদা। অভিযোগ, সেই মহিলা শিশুকে নিয়ে চম্পট দেন। সন্তানের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ শুরু করে পরিবার। পরে ডায়মন্ড হারবার থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়। তার পর কেটে গেছে প্রায় ৬ বছর। অবশেষে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার তৎপরতায় পাচার হওয়া শিশু সন্তানকে উদ্ধার হল।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাবালকের পরিবার জানতে পারে হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়ার পর তাঁদের শিশুসন্তান একাধিক হাত ঘুরে চড়া দামে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি শিশুর পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানায়, শিশুটিকে নাকি দেখা গিয়েছে হাওড়ার সাঁকরাইলে। সোমবার ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) পলাশচন্দ্র ঢালির নেতৃত্বে হাওড়ায় অভিযান চালিয়ে চুরি হওয়া নাবালককে উদ্ধার করে। পাশাপাশি পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কুতুবউদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
নিখোঁজ শিশুর মা আসমুদা বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম ছেলেকে বোধহয় আর দেখতে পাব না। ভাবিনি আবার ছেলের মুখ দেখতে পাব। পুলিশকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।’’ এ বিষয়ে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ জেলার পুরনো অপরাধের ঘটনা খতিয়ে দেখার সময় এই কেসটি আবার সামনে আসে। বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর পেয়ে আমরা শিশুটিকে উদ্ধারে নেমে পড়ি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে শিশুটিকে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল। এক জনকে আটক করে তদন্ত চলছে। উদ্ধার হওয়া শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।’’