মহম্মদ সেলিম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বামেদের এসপি অফিস ঘেরাও অভিযান নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। চোপড়াকাণ্ডে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার ইসলামপুরে কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল বামেরা। দুপুরে মিছিল করে ইসলামপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে পৌঁছন সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে দেন বিক্ষোভকারীরা। ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধ্বস্তাধস্তি হয় বাম কর্মী-সমর্থকেদের। এই ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে এলাকায়।
গত ৩০ জুন দুপুরে প্রকাশ্যে এসেছিল চোপড়াকাণ্ডের ভিডিয়ো (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসেই তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। ভিডিয়ো প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়েছিল যুগলকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবিকে। নির্যাতিতদেরও দেওয়া হয়েছিল পুলিশি সুরক্ষা। চোপড়ার পুলিশ সুপার জানান, ওই দিনই রাতে চোপড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। লিখিত অভিযোগ জানান ভিডিয়ো প্রকাশকারী সেলিম এবং বিজেপি নেতা অমিত মালবীয়ের বিরুদ্ধে। পরের দিন দায়ের করা হয় এফআইআর।
নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে চোপড়ার ঘটনাটির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন সেলিম। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল, এক তরুণ এবং তরুণীকে রাস্তায় ফেলে কঞ্চির ছড়া দিয়ে যথেচ্ছ মারধর করছেন এক ব্যক্তি। চারপাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছেন একদল মানুয। তাঁদের সামনেই মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাচ্ছেন তরুণী। কিন্তু নিগ্রহকারীকে কেউ বাধা দিচ্ছেন না। তিনি তরুণীর চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে আবার মারছেন। মেরেই চলেছেন (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। কিন্তু ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই এ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। সেলিম ভিডিয়োটি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘‘ভিডিয়োয় যাঁকে মারতে দেখা যাচ্ছে, তিনি তৃণমূলের গুন্ডা।’’ পরে ওই একই ভিডিয়ো পোস্ট করে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিতও রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে আক্রমণ করেন।
বামেদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক আনারুল হক বলেন, “ইসলামপুর মহকুমা সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশের কাছে আমরা ডেপুটেশন দিচ্ছি, আলাদা পুলিশ জেলা ঘোষণা হওয়ার পরেও প্রায় প্রতিদিনই কিছুটা কিছু ঘটনা ঘটে চলেছে। যে ভাবে প্রকাশ্যে এক মহিলাকে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনায় পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। আমাদের কাছে কিছু তথ্য রয়েছে, যার ভিত্তিতে সেখানে অন্তত আরও ৫০ জনকে গ্রেফতার করা উচিত।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “ আমাদের দাবি স্পষ্ট। জেসিবির সঙ্গে যাঁদের যোগাযোগ ছিল বা যাঁদের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা ছিল, তাঁদের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে এবং সবারই সাজার ব্যবস্থা করতে হবে।”